মাহান রাব্বুল আল্লামিনকে রাজি খুশি করতে এ জোড় ইজতেমায় ময়দানের নির্দিষ্ট খিত্তায় বসে তাসবিহ-তাহলিল, জিকির আসগার, নফল নামাজ ও ইবাদত-বন্দেগি করছে ভারত থেকে আসা সত্তরোর্ধ মাওলানা আকবর শাহ্। ইবাদতের জন্য আল্লাহ জ্বীন ও মানুষকে এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তারই পরম বন্ধু নবী করিম (স:) এর নিদের্শিত পথ অনুসরণ করে ইমান ও আখলাকসহ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান শোনার জন্য এ দেশে এসেছি।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে হাটহাজারী উপজেলার ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া গ্রামে চলমান ৩ দিন ব্যাপী জোড় ইজতেমায় আসা দ্বিতীয় দিনে ওই বিদেশী মেহমান এ প্রতিবেদককে উল্লেখিত কথাগুলো বলেন।
শুধু আকর শাহ নন, কনকনে শীত উপেক্ষা করে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের অনেক বিদেশী মেহমানসহ দেশের ১৫টি জেলার ১চিল্লা, ৩চিল্লা ও সাল দেয়া আলমী শূরার তাবলিগী সাথীরা প্রায় ৭০ জন আমিরের নেতৃত্বে আলেম-ওলামা ও তাবলিগে তিন চিল্লা সম্পন্নকারীরা এবং স্থানীয় বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্রসহ লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা স্বতঃফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে ইজতেমা মাঠে।
বেলা ১১টার দিকে ইজতেমার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চারদিক থেকে হেঁটে মুসল্লিরা আসছেন। আর যাঁরা প্রথম দিন থেকে ইজতেমার মাঠে আগেই অবস্থান করছেন, তাঁরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর জিকির-আসগার ও তাসবিহ তাহলিলের মাধ্যমে ইজতেমার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত করছে। আজ রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথমবারের মত এ জোড় ইজতেমার আসর শেষ হবে। উক্ত মুনাজাত পরিচালনা করতে পারেন ঢাকার মসজিদের খতিব ও তাবলীগে জামাত বাংলাদেশের প্রধান মাওলানা হাফেজ জুবায়ের আহমেদ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জানিয়েছে আলমী শুরার তাবলিগ জামাতের চট্টগ্রাম জিম্মাদার ও হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতী জসিমুদ্দীন।
তিনি আরও জানান, বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বাদ ফজর আমবয়ান করেন ভারতের মুরব্বি মাওলানা ড. রুহুল্লা। এ সময় তারই পার্শ্বে মঞ্চে উপবিষ্ট কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা জাকের উক্ত বয়ান বাংলাতে তরজমা করেন। গত শুক্রবার থেকেই দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি জড়ো হয়েছেন ইজতেমা ময়দানে। আজ রবিবার আখেরি মোনাজাত শেষে আমরা যার যার আবাসস্থলে ফিরে যাব এবং সেখানে দাওয়াতি কাজ করব।
এদিকে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ইজতেমার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে বলে জানান হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাসুদ আলম। তিনি আরো জানান, শেষ দিনে মুসল্লির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রনে রাখতে মাঠে রয়েছে দুই সহ¯্রাধিক পুলিশ সদস্য সর্বদা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়ন্দা সংস্থার বিশেষ টিমসহ থাকবে মোবাইল টিম ও টহল টিম। বিভিন্ন স্পটে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং ইজতেমার মাঠ নজরদারিতে রাখতে রয়েছে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।
এদিকে, চারিয়া গ্রামে জোড় ইজতেমা মায়দানে ১ম দিনেই ২ হাজার ৭শত মুসল্লিকে চিকিৎসা ও ঔষধ প্রদান করেছে বৃহত্তর চট্টলার দ্বীনি ও সেবামূলক সংগঠন আল আমিন সংস্থা। তিন দিনের জোড় ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষ্যে আল আমিন সংস্থা ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্পে ১৫ জন চিকিৎসক বিনা পরিশ্রমিকে স্বেচ্ছায় সেবা প্রদান করছেন।
ওই সংস্থার কর্মকর্তা, সাধারণ সদস্য, ওয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডিরেক্টর-কর্মকর্তাসহ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করতেছেন। অত্যন্ত সুন্দর ও সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত চিকিৎসা ক্যাম্প আগত তাবলিগের মেহনতের সাথে জড়িত মুসল্লি ও মুরুব্বিদের তৎক্ষনিক জরুরী সেবা প্রদানে সক্ষম হয়েছে।