জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জাগপা সব সময় পাশে ছিল এবং থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। যখন আমরা কাউন্সিল করছি, ঠিক সেই মুহূর্তে গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ। তাকে কারাগারে রেখে আমরা কোনো কথা বলতে চাই না। আমাদের আন্দোলন করতে হবে।
শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাগপার ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তাসমিয়া প্রধান বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের পরিস্থিতি আপনারা সবাই জানেন। আজকে শুধু পেঁয়াজ নয়, প্রতিটি পণ্যের মূল্য বাড়ছে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-যানবাহনের ভাড়াসহ নিত্যপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ কীভাবে বেঁচে আছে, কীভাবে জীবন যাপন করছে, সেই কথা কি আমরা চিন্তা করি?
তিনি বলেন, আমি কোর্ট থেকে গাড়িতে করে যখন বাসায় ফিরি, তখন রাস্তায় ছোট-ছোট বাচ্চারা জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসে। আমি মনে করি, যেই দেশে শিশু শ্রম হয়, সেই দেশ আর যাই হোক উন্নয়নের কোনো দেশ নয়। তারা কথায় কথায় বলেন, উন্নয়নের রোল মডেল। আমারতো মনে হয় বাংলাদেশ ধর্ষণের রোল মডেল, দুর্নীতির রোল মডেল। সেই সময় করেছিল বাকশাল, এখন দুর্নীতির মাধ্যমে তারা করেছে টাকশাল। সাধারণ মানুষ না খেয়ে দিনের পর দিন কীভাবে জীবন পার করছে, সেই প্রশ্ন আপনাদের মাধ্যমে জাতির কাছে রেখে গেলাম।
নিজ দলের ভাঙনের দিকে ইঙ্গিত করে তাসমিয়া প্রধান বলেন, গাছ থেকে একটা পাতা পড়ে গেলে কিছু হয় না। অনেক দুঃখ-কষ্ট আমাদের মনের মধ্যে আছে। কিন্তু আমাদের এখন লক্ষ্য স্থির করতে হবে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সাধারণ মানুষের মুক্তি ও গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছিলেন। আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র ও সাধারণ মানুষের মুক্তি এবং দেশনেত্রীর মুক্তির যেই আন্দোলন সেই আন্দোলনে জাগপা সব সময় পাশে থাকবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বলেন, জাগপা কোনো নবীন দল নয়। জাগপার বয়স ৪০ বছর। এখানে ৪০টি জেলার নেতারা এসেছেন। এতেই প্রমাণ হয় আপনারা সারাদেশে ছড়িয়ে আছেন।তিনি বলেন, আমি আশা করি ২০ দলীয় জোটের মধ্যে যে সম্পর্ক আছে তা ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার।জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষ নিহত হলে সঙ্গে সঙ্গে শফিউল আলম প্রধান (জাগপার প্রতিষ্ঠাতা) বিবৃতি দিতেন। ফেলানী নিহত হওয়ার পর তিনি কঠিন বিবৃতি দিয়েছিলেন। এখন ফেলানীরা অনেক নিহত হয়। কিন্তু কেউ বিবৃতি দেয় না।
জাগপার সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের সভাপতিত্বে কাউন্সিলে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিষয়ক সহ-সম্পাদক অর্পণা রায় দাস, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, জাগপার সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, জাগপা’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান খান, সহ-সভাপতি আবু মোজাফফর মো. আনাছ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাসমতউল্লাহ প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাগপার সাংগঠনিক সম্পাদক ইনসান আলম আক্কাস।