আপিল বিভাগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন শুনানিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গুলশানে নিজ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই যে, বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানকে অপমান বা অবমাননা করতে সরকার দিবে না।
কারণ দেশের জনগণকে নিরাপদে থাকতে দেওয়ার জন্য দেশের আইনশৃখলা পরিস্থিতি রক্ষা করা এবং বিশৃঙ্খলা বন্ধ করা আমাদের দ্বায়িত্ব। যারাই এরূপ আচরণ করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সরকার বাধ্য হবে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন না আসায় সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার জামিন প্রশ্নে শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়।
তখন থেকে জামিন আবেদনের শুনানি এগিয়ে আনার দাবিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা প্রায় তিন ঘণ্টা আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে অবস্থান নিয়ে তুমুল হট্টগোল করেন; তারা স্লোগান দেন- উই ওয়ান্ট জাস্টিস, বেইল ফর খালেদা জিয়।
বিশৃঙ্খলার মধ্যে আর কোনো মামলার কার্যক্রম চালানো যায়নি। পুরোটা সময় আদালতকক্ষ থেকে বের হতে বা নতুন করে কাউকে ঢুকতে বাধা দেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা। বার বার চেষ্টা করেও বিচারকাজ শুরু করতে না পেরে বেলা সোয়া ১টার দিকে এজলাস থেকে নেমে যান বিচারকরা।
বিশৃঙ্খলায় ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, এটা নজিরবিহীন, বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকা দরকার।
এঘটনা নিন্দা জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন,অতীতেও আমরা দেখেছি যে, বিএনপিপন্থী আইনজীবী এবং বিএনপিসমর্থক বহিরাগতরা তাদের বিরুদ্ধে আদালত কোনো আদেশ বা রায় দিলে তারা উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করে।
বিএনপির এই কর্মকান্ডে পরিষ্কারভাবে প্রতীয়মান হয় যে, বিএনপির আইনের শাসনের প্রতি কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপর তাদের কোনো আনুগত্য নেই এবং বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের কাছে নিরাপদ নয়।খালেদার জামিন আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে গত ২৮ নভেম্বর তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ওই প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার আদালতে আসার কথা ছিল।
কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বৃহস্পতিবার সকালে শুনানির শুরুতেই বলেন, খালেদা জিয়ার কিছু পরীক্ষা হয়েছে, কিছু পরীক্ষা বাকি আছে। সেজন্য সময় প্রয়োজন বলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।প্রধান বিচারপতি এ সময় আগামী ১২ ডিসেম্বর শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখে তার আগেই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।