রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে পুকুরে ফেলে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল রোববার দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আসাম কলোনি এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে মেহদী হাসান আশিক (২২), একই এলাকার শাহ আলমের ছেলে মেহদী হাসান হিরা (২৩), নগরীর সাধুর মোড় এলাকার নোমানের ছেলে নবীউল উৎস (২০) ও ছোটবনগ্রাম এলাকার খন্দকার আলমগীরের ছেলে নজরুল ইসলাম(২৩)। তারা সবাই রাজশাহী পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী। এর আগে ঘটনার পরপরেই আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে ইন্সটিটিউটের অধ্যয়নরত ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করেছেন শিক্ষকরা। এদিকে রুয়েটের পর রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এবার সন্ধান পাওয়া গেছে শিক্ষার্থী নির্যাতনে ব্যবহৃত একটি কক্ষ। ১১১৯ নম্বর এই কক্ষকে ছাত্রলীগ বানিয়েছিল ‘টর্চার সেল’। যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে ছিল এক আতঙ্কের নাম। এখানে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের নামে চলতো ছাত্রলীগের নির্যাতন।

এদিকে, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত সেই কমিটি গতকাল রোববার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারই প্রেক্ষিতে কমিটির সদস্যরা ঢাকা থেকে এসে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন। এছাড়াও রোববার দুপুরে রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সেই ছাত্রলীগের টর্চার সেল ঘুরে দেখেছেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি। এ সময় তদন্ত কমিটির প্রধান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক এসএম ফেরদৌস আলমকে শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিষয়টি অবহিত করেন অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ।

এ সময় কক্ষটি থেকে বেশ কিছু রড, লাটি ও লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে দেয়ালে রক্তের দাগ এবং মেঝে জুড়েই ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে সিগারেটের মোথা। শনিবার দুপুরে ধাক্কা দিয়ে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে পুকুরে ফেলে দেয় ক্যাম্পাস শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে রাতেই সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫০ জনের নামে মামলা করেন তিনি।