রংপুরের পীরগঞ্জ থানার ভেণ্ডাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে সামসুল ইসলাম (৫৮) নামে এক বৃদ্ধকে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে এলাকাবাসী-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ পুলিশকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া আসামি মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রংপুর পুলিশ।
প্রত্যাহার হওয়া পাঁচ পুলিশ সদস্যদের মধ্যে তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর, একজন এসআই, একজন এএসআই এবং দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্তির আদেশ দেয়া হয়েছে। রংপুর পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে পুলিশ ফাঁড়িতে ওই বৃদ্ধকে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আমিনুল ইসলাম ও পুলিশের সোর্স জিয়ার বিরুদ্ধে । এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে দায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এসময় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এতে ২৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে দুজনকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পীরগঞ্জ থানার ওসি সরেশ চন্দ্র জানান, সামসুল ইসলাম একজন মাদক ব্যবসায়ী। ভেণ্ডাবাড়ি পুলিশ তাকে ১৫ লিটার চোলাই মদসহ আটক করেছে। আজ বুধবার সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত ব্যক্তির বাড়ি মিঠাপুকুর উপজেলার শান্তিপুর গ্রামে। তবে স্বজনের দাবি, নিহত সামসুল ছাগল কেনাবেচা করেন। তিনি বৃদ্ধ মানুষ, জীবনে কোনও দিন চোলাই মদের ব্যবসা করেননি বা করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তাদের অভিযোগ ভেণ্ডাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আমিনুল ও পুলিশের সোর্স জিয়া বাবাকে আটক করে ১ লাখ টাকা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে চোলাই মদের ব্যবসায়ী বানিয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে সারারাত নির্যাতন করে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ধামা চাপা দেয়ার জন্য আত্মহত্যার কথা বলছে পুলিশ।
পরে এ ঘটনা জানাজানি হলে শত শত জনতা ভেন্ডাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। বিক্ষুব্ধ জনতা ভেন্ডাবাড়ি বড়দরগা সড়ক অবরোধ করায় ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।