প্রমত্তা পদ্মায় বিলীন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। সাজানো-গোছানো ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা, চিরচেনা পরিবেশ মুহূর্তেই পরিণত হচ্ছে অথৈ জলে। বসতবাড়ি, ভিটে-মাটির ওপর দিয়ে এখন বয়ে চলেছে পদ্মার তীব্র ¯্রােত। ঘরবাড়ি সড়িয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে ছুটছে নদী ভাঙনের শিকার শিবচরের চরাঞ্চলের পরিবারগুলো। নদী থেকে অনেক দূরে গিয়ে জমি ভাড়া করে আশ্রয় নিতে হচ্ছে তাদের। মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার পদ্মা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের জনপদে দেখা গেছে এ চিত্র।
বছরের পর বছর পদ্মার ভাঙনে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে বহু বছর আগে গড়ে উঠা পদ্মার চরাঞ্চলের জনপদ। নিঃস্ব হচ্ছে এই এলাকার মানুষ। সহায়-সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে চরের খেটে খাওয়া পরিবারগুলো।
জানা গেছে, চলতি বছর বর্ষার প্রথম দিকে পানি বাড়লে উপজেলার কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত ও বন্দোরখোলা ইউনিয়নের পদ্মার তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ভাঙন দেখা দেয়। এরপর পানি কমতে থাকলে কমে আসে পদ্মায় ¯্রােতের বেগ, সেই সঙ্গে ভাঙনও। তবে হঠাৎ করেই সপ্তাহখানেক ধরে পানি বৃদ্ধির ফলে ফের ভাঙন বেড়েছে চরের এসব এলাকায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, চলতি বছর শুধু বন্দোরখোলা ইউনিয়নেরই প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছে। নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো অন্যের জমি বছর চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে ঘর তুলে থাকছেন। শুক্রবার ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। অনেক পরিবারকে ঘরবাড়ি ভেঙে চর ছেড়ে মূল ভূ-খণ্ডে যেতে দেখা গেছে।
বন্দোরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসূরা এলাকার বাসিন্দারা জানান, যাদের ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে তারা মূল ভূ-খণ্ড পাঁচ্চর, মাদবরেরচর এলাকার হাওলাদারকান্দি, শিকদারকান্দি, মালেরকান্দিসহ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে মানুষের ফসলি জমি ভাড়া করে ঘর তুলে থাকছেন।
এছাড়াও ভাঙন হুমকিতে থাকা অনেক পরিবারই আগে থেকেই জায়গা ভাড়া করে রেখেছে। অন্যরা চলে গেছে পদ্মার ওপার মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে। াজিরসূরা বাজারের মিষ্টির দোকানদার হারুন অর রশিদ জানান, চরের বেশিরভাগ ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোই এখন ভাড়া করা জায়গায় থাকছে।
সবরীন জরীন,মাদারীপুর।