সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, দুর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে যা যা করা দরকার সবই করা হবে। চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযান কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের বিরুদ্ধে নয়। এটি অপরাধীদের এবং দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে।
বিএনপি নেতা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকারের সঙ্গে কোন আলোচনা চলছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়টি মানবিক বিষয়ের পাশাপাশি আইনগত বিষয়টিও দেখতে হবে। আমি যতদুর জানি বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ ও তাদের এমপিগণ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা বিষয়টি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং আমাকে জানিয়েছেন। হারুন অর রশিদসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ আমার মাধ্যমে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি বিবেচনার জন্য কথা বলেছেন। বৃহষ্পতিবার ভারতে যাওয়ার সময় বিমান বন্দরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি বিষয়টি জানিয়েছি। এ পর্যন্ত আমি সরকারী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত সম্বলিত কোন রেসপন্স পাই নি। কাজেই বিষয়টি নিয়ে এমুহুর্তে একই কথা বারবার বলার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
তিনি শুক্রবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের খাড়াজোড়া এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উন্নয়ন ও নির্মাণাধীণ ফ্লাই ওভারের কাজ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে দুর্বৃত্তায়নের একটি চক্র রয়েছে, এই চক্রটি ভেঙে দিতে হবে। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এ অভিযান শুরু করেছেন ঘর থেকে, আপন ঘর থেকে তিনি শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। যারাই অপরাধী, যেখানেই অপরাধী থাক সেটা ঢাকা হোক অথবা গাজীপুর হোক, বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, কুতুবদিয়া থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত সারা বাংলাদেশের যেকোনো অপকর্মকারী, যেকোন অপরাধী, যেখানেই দুর্বৃত্ত, যেখানে চাঁদাবাজী, লুটপাট টেন্ডারবাজী সেখানেই এ অভিযান চলবে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি দিল্লী যাওয়ার প্রাক্কালে বলে গেছেন এই শুদ্ধি অভিযান কোন অবস্থাতেই শিথিল হবে না, অব্যহত থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দায়িত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড আছে, তারা তাকে পরীক্ষা করে দেখেন এবং চিকিৎসা সেবা দেন। খালেদা জিয়ার অসুস্থ্যতার বিষয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দ যা বলছেন বা দাবী করছেন, তার সঙ্গে চিকিৎসকদের রিপোর্টের কোন মিল বা সঙ্গতি নেই। তিনি বলেন, আমার মনে হয় এখানে মানবিক বিষয়টি যেমন দেখতে হবে, একইভাবে এখানে একটি আইনগত বিষয় রয়েছে। আইনগত বিষয়টি সরকারের হাতে নয়। এটা আমি বারবার বলেছি, বারবার বলার চেষ্টা করেছি। তিনি যদি জামিন পান এবং চিকিৎসকদের পরামর্শে যদি বিদেশে যাওয়ার মত অবস্থা তার হয় এবং সে রকম পর্যায়ে তার অবস্থার অবনতি ঘটে, সেটা পরবর্তীতে বিবেচনা করা যাবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অপরাধ-অপকর্মের বিরুদ্ধে অভিযান আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সবাই করতে পারে। র্যাব একটি এলিট ফোর্স। র্যাবকে কৌশলগত কারণে এই অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। র্যাব অভিযানটা করলে অভিযানটা কার্যকর (ইফেকটিভ) হবে। সেটা মনে করে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশও করছে, পুলিশের কাজ পুলিশ করবে, এখানে কাউকে ছোট করা হচ্ছে না। র্যাবও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, তাদের দায়িত্ব আছে। যাকেই যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা সে দায়িত্ব পালন করবে। কাজ ভাগ করা আছে। র্যাব র্যাবের দায়িত্ব এবং পুলিশ পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিনের খান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, সওজ’র গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুদ্দিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।