রাজশাহীতে থানার পাশেই নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে কলেজছাত্রী লিজা রহমানের আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার লক্ষীনারায়ণপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সাখাওয়াত চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার খান্ধুরা গ্রামের মাহবুব আলম খোকনের ছেলে। জেলার মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম রসূল কুদ্দুস গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, লিজাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার বাকি আসামিদেরও ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, লিজার বাবা আলম মিয়া বাদী হয়ে বুধবার রাতে মহানগরীর শাহ মখদুম থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তার মেয়েকে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত করা হয়েছে বলে তিনি মামলায় অভিযোগ করেছেন। মামলায় লিজার স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া লিজার শ্বশুর মাহাবুব আলম খোকন ও শাশুড়ি নাজনিন বেগমকেও আসামি করা হয়েছে। শাহ মখদুম থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি, তদন্ত) বনী ইসরাইলকে মামলাটি তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর নগরীর শাহমখদুম থানায় লিজা তার স্বামী সাখাওয়াত ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে যান। কিন্তু তার অভিযোগ না নেওয়ায় ক্ষোভে ও অপমানে থানা থেকে বেরিয়েই নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন লিজা।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাকে ওইদিনই ঢাকায় পাঠান চিকিৎসকরা। এরপর বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে লিজার মৃত্যু হয়। ওইদিনই দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।
ময়নাতদন্ত শেষে লিজার লাশ বুধবার রাতে দাফনের জন্য গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে গাইবান্ধায় নিজ গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে লিজাকে দাফন করা হয়।