বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের জালশুকা খাড়–য়া গ্রামের চান্দাই মোড়ে বিলে ফেলে দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়ার নষ্ট ব্যবহার অনুপযোগী ২৪০ বস্তা কুচিকুচি করে কাটা টাকা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনসহ মানুষের মধ্যে তোলপাড়। কেউ বলছিল ঘুষ দুর্নীতির টাকা হজম করতে না পেরে বিপুল পরিমান টাকা বিলের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আবার কেউ বলছে জুয়ার টাকা ধরা পড়ার ভয়ে ওই বিলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ফেসবুক ও দুই একটি টেলিভিশন এবং অন লাইনে গুজবের কারণে বিল পাড়ে উৎসুক মানুষের ঢল নামে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন নিশ্চিত করে এটা কোন ঘুষ দুর্নীতি অথবা জুয়ার কোন অবৈধ টাকা নয়, এগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়ার নষ্ট টাকা। যা বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ক্রমে বগুড়া পৌর সভাকে দিয়েছিল ডাম্পিং করার জন্য।
স্থানীয় আজাহার জানান, সোমবার রাত ৮ার দিকে ৩টি ট্রাক এসে এই অকেজো টাকার বস্তা পানিতে ফেলে দেয়। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় লোকজন বিলের ধারে টাকার টুকরো গুলো দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ৪/৫ বস্তা টাকার টুকরো নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে থানায় নিয়ে আসে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইলেকট্রনিক মিডিয়া কর্মী, সংবাদপত্র কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ ঘটনাস্থলে পৌছে যায়। মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরী হয়। শাজাহানপুর থানা পুলিশ সহ পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে টাকার উৎস কোথায়। দীর্ঘ সময় পর পুলিশ নিশ্চিত করেন এ টাকার টুকরো গুলো বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়ার নষ্ট টাকা।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, উদ্ধার হওয়া এই টাকা গুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নষ্ট টাকা। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক নষ্ট টাকা গুলো ধ্বংস করার জন্য বগুড়া পৌরসভাকে দিয়েছিল। বগুড়া পৌর সভা এই টাকাগুলো উল্লেখিত স্থানে ফেলেছে।বগুড়া পৌর সভার মেয়র ্এ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান বলেন, ব্যবহার অনুপযোগী টুকরো টুকরো করা টাকার বস্তাগুলো দিয়েছিল ডাম্পিং করার জন্য। এ বিপুল পরিমান টাকা পুড়িয়ে ফেলার কোন ব্যবস্থা পৌর সভার নেই, তাই এই বস্তা গুলো খাড়–য়ার বিলে ফেলে দেয়া হয়। ব্যবহার অনুপযোগী টাকা এভাবে গুজব ছড়াবে তা আমার ধারণা ছিল। আর পৌর সভার যে সব শ্রমিক একাজ করে তাদেরও জানা ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়ার মহাব্যবস্থাপক জগন্নাথ চন্দ্র ঘোষ জানান, বস্তা বস্তা টুকরো টাকা গুলো দেখেছেন তা নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। এই টাকাগুলো শত শত টুকরো করা আর টাকা ধ্বংস করার সনাতন পদ্ধতি হলো পুলিয়ে ফেলা। কিন্তু বড় বড় টাকা পোড়ালে প্রচুর ধোয়া হয়। আশেপাশে বাড়ির লোকজন পরিবেশে দুষণের জন্য বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের আপত্তি রয়েছে। তাই বাংলাদেশ প্রধান কার্যালয়ের পরামর্শে বগুড়া পৌর সভার সঙ্গে কথা বললে তারা রাজি হয়। রবিবার তাদের কাছে ২৪০ বস্তা নষ্ট টাকার বস্তা তারা নিয়ে গিয়ে ওই বিলে ফেলে দেয়। শাজাহানপুর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, সোমবার সকালে স্থানীয়দের খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে জ্জ বস্তা নষ্ট টাকার টুকরো নমুনা সংগ্রহ করে থানায় নিয়ে এসেছি। এ ব্যাপারে জিডি করা হয়েছে।