আদালতের নির্দেশ অনুসারে বিএসটিআইর লাইসেন্স দেওয়া পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা শেষে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, আইসিডিডিআরবি এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (সাভার) ল্যাবরেটরির তিনটি প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। তবে চারটি ল্যাবরেটরির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ থাকলেও এখনও জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির প্রতিবেদন আদালতে জমা হয়নি।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বিএসটিআই এসব প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে প্রতিবেদনের ওপর শুনানির জন্য মামলাটি বুধবার (২৪ জুলাই) পর্যন্ত মুলতবি রেখেছেন আদালত।
আদালতে বিএসটিআইয়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এমআর হাসান। অন্যদিকে, রিটের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
এর আগে গত ১৪ জুলাই বিএসটিআই অনুমোদিত কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে চারটি ল্যাব প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওইসব ল্যাবে দুধের অ্যান্টিবায়োটিক, ডিটারজেন্ট, এসিডিটি, ফরমালিন ও অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি আছে কিনা, তা পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া ওই প্রতিবেদন পৃথক পৃথকভাবে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।
ওই দিন ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেছিলেন, দুধ পরীক্ষার জন্য বিএসটিআইতে ৯টি প্যারোমিটার রয়েছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে যে পরীক্ষা হয়, সেখানকার ল্যাবে ১৯টি প্যারোমিটার আছে। আমি আজ আদালতে বাইরের কয়েকটি দেশের দুধের মান নির্ধারণের উদাহরণ তুলে ধরে দেখিয়েছি, তারা দুধ পরীক্ষার জন্য ৩০ ধরনের প্যারোমিটার ব্যবহার করে। এদিকে দুধের মান পরীক্ষার জন্য বিএসটিআই একটি কমিটি করেছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে ওই কমিটি গঠিত হলেও তারা গত সাত মাসে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই সব বিষয়ে আদালত আমাদের শুনানি নিয়ে পাস্তুরিত দুধের পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, পাস্তুরিত দুধ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) গবেষণা প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজারে থাকা ৭৫ শতাংশ পাস্তুরিত দুধেই ভেজাল ধরা পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ।