খাবারের স্বাদ বিষিয়ে দিচ্ছে ভেজাল ঘি।হাটহাজারীতে ভেজাল ঘি এর কারখানা এখন অলিগলিতে। নামীদামী ব্র্যান্ডের নামে গোপন কারখানার ঘি চলছে বাবুর্চিকে কমিশন দিয়ে। দেদারসে চলছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

অভিযোগ রয়েছে, কারখানা মালিকদের ৫০ থেকে ২শ’ টাকার পর্যন্ত টোকেনের ভিত্তিতে বাবুর্চিরাই মূলত এসব ঘি ক্রেতাকে কিনতে বাধ্য করে। দেশের সবচেয়ে বেশি ঘি ভেজাল হচ্ছে হাটহাজারী উপজেলায়। ঘি সুস্বাদু খাবারের অনন্য উপাদান হওয়ায় ঘি এর ব্যবহার হয় সবচেয়ে বেশি।হাটহাজারীতে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় ডজন ভেজাল ঘি কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। এদিকে, এই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমীন প্রতিনিয়ত ভেজাল ঘি ও খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারক কারখানাগুলো খুঁজে বেড়াচ্ছেন। এমনকি এলাকার মানুষজনকেও তিনি কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে তথ্য আদায়ে উদ্বুদ্ধ করছেন।

বিগত কয়েক মাসে তিনি দেড় ডজনেরও বেশি ভেজাল ঘি এর কারখানায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা, সতর্ক ও কারখানা সিলগালা করে দিয়েছেন। এই উপজেলায় এত বেশি ভেজাল ঘি এর কারখানা রয়েছে যা প্রতিনিয়ত উপজেলা অফিসে তথ্য আসছে। শুধু তাই নয়, লাল সার, ডালডা, পামওয়েল, ফ্লেভার সহ মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর রংসহ নানা উপকরণ দিয়ে এসব ভেজাল ঘি তৈরি করার ঘটনাও ঘটছে।

দীর্ঘদিন ধরে হাটহাজারীতে ভেজাল ঘি এর কারখানা বিদ্যমান থাকলেও থানা পুলিশ ও পূর্ববর্তী উপজেলা প্রশাসন কি করেছিল। বছরের পর বছর এসব কারখানায় ভেজাল ঘি উৎপাদন করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বিক্রি করেছে। এতে প্রকৃত ঘি কারখানার মালিকরা ও ক্রেতা সাধারণ প্রতারণার শিকার হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৯ মে) বেলা তিনটায় পরিচালিত সর্বশেষ হাটহাজারীর মধ্য বুড়িশ্চর এলাকায় একটি ঘির কারখানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় দেড় হাজার লিটার ভেজাল ঘি জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে। জব্দকৃত ঘির বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রুহুল আমীন বলেন, মধ্য বুড়িশ্চর এলাকায় আব্দুল আওয়ালের ঘি কারখানায় অভিযান চালিয়ে দেড় হাজার লিটার ভেজাল ঘি জব্দ ও ধ্বংস করেছি। আওয়ালের স্পেশাল ব্র্যান্ড হল জব্বার ব্র্যান্ড। এছাড়াও প্রায় দুই লাখের মতো বাঘাবাড়ি স্পেশাল ঘিসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্টিকার পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ভেজাল ঘির কারখানাটিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্টিকার তৈরি করা আছে। যখন যে ব্র্যান্ডের ঘি লাগবে ওই ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে সরবরাহ করতেন আওয়াল। এ অপরাধে আওয়ালকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিংসহ বিভিন্ন ভেজাল ঘির কারখানায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা এ ব্যাপারে নজরদারি ও কঠোরতা আরও বাড়াবে বলে তিনি জানান।