ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে এবার রোজার প্রথম দিনেই বৃষ্টি হওয়ার দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, সেই সম্ভাবনা শেষ হয়েছে অল্পতেই! উল্টো সংযমের প্রথম দিনে দেশজুড়ে চলছে মৃদু তাপপ্রবাহ। আগামী চারদিন এমন পরিস্থিতি থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব কেটে যাওয়ার এক দিনের মাথায় সোমবার দাবদাহ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীসহ দেশের আরও কয়েকটি স্থানে দাবদাহ শুরু হতে পারে, চলতে পারে তিন-চার দিন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ফণীর প্রভাব শেষ হয়ে যাওয়ার পর আবার গরম বাড়তে শুরু করেছে। তবে, বাতাস থাকার কারণে দেশের বেশিরভাগ জায়গাতেই গরম সেভাবে অনুভূত হচ্ছে না। এ সপ্তাহে গরমের তেজ আরও বাড়বে।আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। সোমবার (৬ মে) ঈশ্বরদীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের সর্বত্র এবং খুলনার কিছু কিছু জায়গায় মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে।

রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগের অধিকাংশ এলাকায় মঙ্গলবার (৭ মে) সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে রয়েছে। ঢাকার তাপমাত্রাও এর আশেপাশে উঠানামা করছে। কমপক্ষে আরও চারদিন তাপমাত্রা এমন ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।বাংলাদেশে শুধুমাত্র সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে,রোজার প্রথম দিনের গরমে কাহিল হয়ে পড়েছেন বেশিরভাগ নগরবাসী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের ষাটোর্ধ্ব কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, গরম আছে, আবার বাতাসও হচ্ছে। রোজার প্রথম দিনটি খারাপ যাচ্ছে না। তবে, আমাদের মতো বয়স্ক মানুষ যারা আছেন তাদের হয়তো কিছুটা কষ্ট করতে হচ্ছে। কারণ, বার্ধক্যজনিত নানা কারণে আমাদেরকে এমনিতেও কষ্ট করতে হয়।

দেশের বেশির ভাগ স্থানের তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ এবং টাঙ্গাইল, নীলফামারী, দিনাজপুরে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে, যা দাবদাহ হিসেবে পরিচিত।চলতি মে মাসের জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই মাসে বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে, যার একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি কালবৈশাখী এবং অন্যান্য স্থানে চার থেকে পাঁচটি বজ্রসহ ঝড়ের আশঙ্কা আছে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এক থেকে দুইটি এবং অন্যান্য স্থানে দুই থেকে তিনটি দাবদাহ হতে পারে।

এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, এপ্রিল ও মে হচ্ছে বছরের সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। সাধারণত এই সময়ে একটি ঘূর্ণিঝড় ও একাধিক নিম্নচাপ তৈরি হয়ে থাকে।আগামী কয়েক দিনের আবহাওয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে আরিফ হোসেন বলেন, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ এবং দেশের মধ্যাঞ্চলে দাবদাহ শুরু হয়েছে। আগামী চার থেকে পাঁচ দিন এই দাবদাহ চলতে পারে, যা দেশের নতুন নতুন এলাকায় বিস্তৃত হতে পারে।গত এপ্রিল মাসের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত এপ্রিলে সারা দেশে গড়ে ২০ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে।তবে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে।