বেসিস সফট এক্সপো ২০১৯ -এ ডিজিটাল মার্কেটিং পেমেন্ট পলিসি নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক অরুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট পলিসি বিভাগের সদস্য রেজাউল হাসান।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মডারেটর এবং আহবায়ক ছিলেন বেসিস স্ট্যান্ডিং কমিটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কো- চেয়ারম্যান কে এ এম রাশিদুল মজিদ। মূল বক্তব্য প্রদান করেন এনালাইজেন বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রিসালাত সিদ্দিক। আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, বেসিসের ডিরেক্টর ইন চার্জ ডিজিটাল মার্কেটিং স্টেন্ডিং কমিটি দিদারুল আলম সানি, মাস্টার কার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, এস এস এল ওয়েরলেসের চিফ অপারেটিং অফিসার আশীষ চক্রবর্তী এবং এরা ইনফোটেক লিমিটেডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

মোহাম্মদ রিসালাত সিদ্দিকের প্রেজেন্টেশনে উঠে আসে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ফেসবুক এবং গুগলের ভূমিকা এবং কীভাবে এই জায়ান্ট কোম্পানিগুলো ট্যাক্স না দিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। প্রেজেন্টেশনে উঠে আসে বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় ফেসবুকে, যার বেশির ভাগই যায় ছোট ছোট কোম্পানি অথবা ব্যক্তি উদ্যোগে ফেসবুক পেজে ব্যবসার মাধ্যমে, যার কোনো ট্যাক্স/ভ্যাট সরকার পায় না।

গত দুই বছরে দেশের ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের পরিসর বেশ বেড়েছে। কিন্তু ট্যাক্স/ভ্যাট এবং পেমেন্টের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা কাজ করছে। এ সমস্যা দূর করতে এর সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।

তারা বলেন, ডিজিটাল মার্কেটিং খাতের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে এবং ভ্যাট/ট্যাক্সে স্বচ্ছতা আনতে একটি নির্দিষ্ট পেমেন্ট সিস্টেম দরকার। দরকার পরিকল্পিত গাইডলাইনের, যেটি অনুসরণ করে গুগল/ফেসবুকে পেমেন্ট করা হবে, যাতে সরকারের রাজস্ব আয় নিশ্চিত হবে।

এছাড়া, আলোচকরা সরকারের কাছে ডিজিটাল মার্কেটিং খাতের উপর আরোপিত অনাবাসী কর পাঁচ বছরের জন্য রহিত করার দাবি জানান, যাতে সবাই অবৈধ পেমেন্ট ব্যবহার না করে এই বৈধ পেমেন্ট চ্যানেল ব্যবহার করতে উৎসাহিত হয়। এটি ব্যবহৃত হলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সকল পেমেন্ট লিগ্যাল হবে এবং সরকার জানতে পারবে, কত টাকা আসলে গুগল এবং ফেসবুকের কাছে যাচ্ছে, যা সরকারকে এই জায়ান্ট কোম্পানিগুলো দেশে আনার জন্য নেগোসিয়েশনে সহয়তা করবে, যেমনটি হয়েছে ভারতে।

প্রধান অতিথি রেজাউল হাসান বলেন, আমরাও এ রকম কিছুই চিন্তা করছি, খুব ভালো লাগলো দেখে যে, আপনাদের চিন্তার সাথে আমাদের চিন্তার মিল আছে। এই পেমেন্ট সিস্টেম চালু হলে অনেক কিছু স্বচ্ছ হবে এবং ভ্যাট/ট্যক্স আদায় সহজ হবে। এই প্রস্তাবিত পলিসি বাস্তবায়নে বোসিসকে সর্বাধিক সহায়তা করব।

এছাড়া বক্তারা লোকাল অ্যাড নেটওয়ার্কগুলোকে ভ্যাট এবং ট্যাক্সের আওতা থেকে মুক্ত করার দাবি জানান। এটি হলে লোকাল ইন্ড্রাস্ট্রিগুলো গুগল/ফেসবুকের সাথে পাল্লা দিয়ে বাজার দখল করতে পারে।

লোকাল অ্যাডভার্টাইজারদের লোকাল প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা, মনোপলি বাজার নীতি থেকে বের হয়ে মুক্ত বাজার নীতিতে কাজ করার অনুরোধ জানান অনেকে। যারা ফেসবুকের মত লোকোল প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করছেন; যেমন রিটস ব্রাউজারের মত লোকাল ব্রাউজারকে বেশি সুযোগ সুবিধা এবং প্রচারে সহায়তার দাবি জানান কেউ কেউ।

পরিশেষে সবাই একটি সঠিক বাজার নীতি তৈরি করার ব্যাপারে জোর দাবি জানান, যাতে আসন্ন বাজেটে এর প্রতিফলন ঘটে। এছাড়া এই নীতিমালা হলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে লোকাল বাজার বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় নিশ্চিত হবে।