ঠাকুরগাঁও শহরের ফাঁড়াবাড়ি রোডে সেনুয়া নদীর উপরে ভেঙেপড়া বেইলী ব্রিজটির ১ জোঁড়া পুরাতন পিলারের উপরে শুরু হয়েছে নতুন ব্রিজ নিমার্ণের কাজ। একদিকে পুরাতন পিলার অপর দিকে ব্রিজটি ভাঙার জন্য দায়ি ব্যক্তির নতুন ব্রিজ নির্মাণের ঠিকাদারি কাজ করায় জনমনে হতাশা দেখা দিয়েছে।

বরুনাগাঁও এলাকার শাওন বলেন, দীর্ঘদিন পরে নতুন ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে এলাকার জন্য এটা খুব ভাল খবর কারণ কষ্টের অবসান হতে যাচ্ছে। কিন্তু এ কেমন বিচার যে ব্রিজ ভাঙলো সে আবার ঠিকাদারি কাজ করছে। তারপরেও ৬ টি পিলারের মধ্যে ২ টি পুরাতন। যে পিলারে বেইলী ব্রিজ ভেঙে যায় সে পিলারে বড় ব্রিজ হচ্ছে। ভবিষ্যতে কিছু হলে আমাদের কি হবে?

একই এলাকার আব্দুল আওয়াল বলেন, মনে করে ছিলাম নতুন ব্রিজ হচ্ছে সব নতুন হবে এখন দেখি ভিত্তিটায় পুরাতন। ব্রিটিশ আমলের বেইলী ব্রিজের পুরাতন পিলারে এত টাকা ব্যয়ে নতুন ব্রিজ হবে ভাবতে পারিনি। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি তারা যেন সঠিক নজর দাড়িতে ব্রিজের কাজ শেষ করেন।

উল্লেখ্য ঠাকুরগাঁও শহরের সেনুয়া বেইলী ব্রিজটি মালবাহী ট্রাকসহ ভেঙে পড়েছিল ২০১৭ সালের ৮ ডিসেম্বর। ওই রাতে একটি কয়লা বোঝাই ট্রাক ঝুঁকিপূর্ণ সেনুয়া বেইলী ব্রিজটির উপর উঠলেই ব্রিজটির উত্তর পাশের অংশটি ভেঙ্গে পড়ে। ওই সময় ব্রিজের উপরে থাকা বরুনাগাঁও এলাকার ধন মোহাম্মদের ছেলে আইনুল হক (৬৫) নামের একজন পথচারি আহত হয়েছিলেন।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা এই ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় সদর উপজেলার সঙ্গে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পরে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তবে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৭০ মিটার ব্রিজের ৩ জোড়া পিলারের মধ্যে ১ জোড়া পুরাতন পিলার থাকায় জনমনে হতাশা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, শহরের বরুনাগাঁও এলাকায় অবস্থিত সেনুয়া বেইলি ব্রিজটি দীর্ঘদিন আগেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষ। ওইদিন রাতে শহরের ঠিকাদার রাম বাবুর ভাটায় কয়লা নেয়ার সময় একটি দশ চাকার ট্রাক ব্রিজের উপর ওঠা মাত্রই ভেঙে পড়ে। সেই রাম বাবুই আবার ব্রিজ নির্মাণের ঠিকাদারি কাজ পাওয়ায় বেশ উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী কান্তেশ্বর বর্মন বলেন, সেনুয়া বেইলি ব্রিজটি অনেকদিন আগেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। তবুও ওই ব্রিজটি দিয়ে মানুষ ভারি যানবাহন নিয়ে চলাচল করছিল। ফলে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। ব্রিজটি নতুন ভাবে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে আশা করি কিছু দিনের মধ্যে মানুষের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা দেওয়া হবে। পুরাতন পিলারে নতুন ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্রিজটিতে ছয়টি পিলারের মধ্যে ২ টি পিলার আগের। অভিজ্ঞদের মাধ্যমে দেখা গেছে পিলার ২ টি অনেক মজবুত আছে। পিলার ২টি পুরাতন হলেও নতুন পিলারের কোন অংশে কম নয় তাই সেই ভাবে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। নতুন পিলারে ব্রিজটি করতে ব্যয় আরও অনেক বেড়ে যেত। প্রকৃত ঠিকাদার দ্বারা নতুন ব্রিজ ভাল ভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে এতে ঝুঁকির কোন সম্ভবনা নাই। আর পুরাতন বেইলী ব্রিজটির অংশ দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলায় একটি ব্রিজের মেরামত হচ্ছে।