বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন, গণমাধ্যমকে অগ্রসর হতে হবে মানুষের কল্যাণে। তাহলে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন ঘটবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সম্মান যে জায়গায় যাওয়া দরকার সেখানে নেই, এখানে গণমাধ্যমের বড় ভূমিকা থাকা দরকার। নানা কারণে আজ মুক্তিযুদ্ধের নামে অনেক কিছু ঘটছে যা আমাদের কাম্য নয়। গণমাধ্যম এসব জায়গা থেকে সরে যাচ্ছে কিনা সেটা দেখতে হবে।

বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সাপ্তাহিক নতুন কথা’র ৪০ বছর পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধ এবং গণমাধ্যম’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর কিছু মানুষ তাদের ব্যক্তিস্বার্থ লাভের আশায় ব্যস্ত রয়েছে। মনে রাখতে হবে এটি অকল্যাণ বয়ে আনবে। আজ দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সত্যতার ওপর প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় কর্তৃত্ববাদীরা মাথাচড়া দিয়ে উঠছে। নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে, তারা কি তাদের মাতৃভাষায় কথা বলতে পারছেন? রাষ্ট্রের উচিৎ তাদের মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করা। সমাজের শুধু উন্নয়ন করলেই হবে না, বৈষম্যও কমাতে হবে।

প্রবীণ সাংবাদিক কামাল লোহানী বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকতে হবে। আমরা আইযুব খান, ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, মিছিল করেছি, লিখেছি। এখন সাংবাদিকদের ইউনিয়ন আছে তবে তারা কথা বলতে পারেন না। দেশের প্রধানমন্ত্রী আজ সাংবাদিকদের ধমক দেন আর তারা মাথা নিচু করে থাকেন। মনে রাখতে হবে সাংবাদিকতা করতে হলে যেমন চমক থাকবে ঠিক তেমনি ভাষার দিকও থাকতে হবে, ব্যাকরণের ব্যবহার জানতে হবে।

রাশেদ খান মেনন বলেন, এখন নানা মাধ্যমে নানা ধরনের লেখালেখি করা হয়। আবার আইসিটি আইন হয়েছে, এর প্রয়োগ নিয়ে বিতর্ক আছে। আমরা দিন দিন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভুলে যাচ্ছি কিনা। শেষ পর্যন্ত আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করেছি, এর মাধ্যমে শিয়া-সুন্নী লড়াইয়ে সামিল হলাম কিনা দেখার বিষয়।

মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, এরশাদ সরকারের আমলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার লেখার কারণে তিনটা পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছিল। অথচ স্বাধীন সংবাদমাধ্যম ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকলে দুর্ভিক্ষসহ সব সমস্যা দূর করা সম্ভব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নতুন কথার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মানিক।