একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন বুধবার (৩০ জানুয়ারি) মানববন্ধন এবং খালেদা জিয়ার কারাবন্দির একবছর পূর্তির দিন আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জনসভা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।তিনি জানান, একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন বুধবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। একইসঙ্গে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবন্দির একবছর পূর্তির দিন আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার দল।

রিজভী বলেন, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মহাতামাশার নির্বাচন। চরম মিথ্যাচার, অনুশোচনাহীনতা ও গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে নির্লজ্জভাবে ম্যানুফ্যাকচার্ড ভোটের ফলাফল ঘোষণা করে নিজেরা আত্মপ্রসাদ লাভ করলেও জনগণকে বোকা বানানো যায়নি। মহাভোট ডাকাতির মহা সমারোহ জনগণ দিব্যচোখে অবলোকন করেছে।তিনি বলেন, ভুয়া ভোটের মিথ্যা জয়ের অহংকারে ধানের শীষের নেতাকর্মী, সমর্থকসহ গরীব মানুষের বাড়িঘর, দোকান, বাজার ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এবং পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে ঘরছাড়া করা হয়েছে। নির্বাচনের নামে এক অসুস্থ পরিবেশ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে রাষ্ট্র-সমাজের সর্বত্র।

নির্বাচন পূর্বাপর ভুয়াভোটের সরকারের জয়োল্লাসের প্রকোপে চারিদিকে শুধু হিংসার ছবি মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘প্রহসনের নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন, আইন-আদালত, পুলিশ-প্রশাসন সবই ভুয়াভোটের সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আঙ্গুলি হেলনে উঠবস করতো। শঠতা ও নির্মম দমন-পীড়নের মাধ্যমে অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী মাঠ কব্জায় নিয়ে তারা একতরফা নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল।

তিনি বলেন, সারাদেশে তারা ভয়-ভীতির শিহরণ সৃষ্টি করে। ভোটের মাঠ শূন্য করতে সরকারী প্রশাসন মহাতৎপরতায় লিপ্ত ছিল। মূলত: রক্তাক্ত মূর্তি নিয়েই তারা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার আত্মসাৎ করে।আগামীকাল সেই ভুয়াভোটের সংসদ বসছে। এই সংসদ গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রেতাত্মা। এই সংসদ গণবিরোধী, এই সংসদ নিরস্ত্র ভোটারদের ওপর অবৈধ সরকারের অবৈধ ক্ষমতা প্রদর্শণকারী গণশত্রুদের আড্ডাঘর। এই সংসদ ইতিহাসের ম্যান্ডেটবিহীন ক্ষমতালোভীদের সম্মিলন হিসেবে বিবেচিত হবে সর্বত্র’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, এ দেশের গণমানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একটি চক্রান্ত এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি তার কারাবন্দির ১ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই কারাবিন্দর প্রতিবাদে এবং তিনিসহ সারাদেশে কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিএনপি। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যেই আমরা চিঠি দিয়েছি।সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নেতা নূরে আরা সাফা, সুলতানা আহমেদ, আমিনুল ইসলামসহ অন্যরা।