ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ৩টায় শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেমের কাছে তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক এই সভাপতি।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আতিকুল ইসলামের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি নিহাদ কবির, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ অন্যরা। তবে এসময় তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক পাঁচ জন। তারা হলেন— সাবেক প্রধান বিচারপতি আতিকুল ইসলামের বড় ভাই তাফাজ্জাল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য এ কে এম রহমাতুল্লাহ, জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন ও এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
অন্যদিকে, আতিকুলের মনোনয়নপত্র সমর্থনকারীরা হলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, আতিকুল ইসলামের সহধর্মিণী ডাক্তার শায়লা সগুফতা ইসলাম ও প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের পুত্র নাভিদুল হক।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি আচরণবিধি মেনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আচরণবিধি যেন লঙ্ঘন না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে বেশি নেতাকর্মী নিয়ে আসিনি।মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আতিকুল ইসলামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী না থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও বাহাউদ্দিন নাসিম সাহেবের আসার কথা ছিল। কিন্তু তারা অন্য একটি প্রোগ্রামে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। তবে আমি যখন প্রচারণা নামব, তখন সবাই আমার সঙ্গে থাকবেন।
মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসার সময় আতিকুল ইসলামের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের প্রাধান্য বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমি কেবল ব্যবসায়ী নয়, নাগরিক সমাজ, রাজনীতিবিদ ব্যবসায়ী, শিক্ষকসহ সমাজের সবার প্রতিনিধি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনি প্রচারণা চালাব।এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
উল্লেখ্য, আনিসুল হক মারা যাওয়ার পর গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করা হয়। ওই তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং কার্যকারিতার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করায় আদালত নির্বাচন স্থগিত করেন।
সম্প্রতি হাইকোর্ট সেই রিট খারিজ করে দেওয়ায় নির্বাচন নিয়ে আইনি বাধা দূর হয়। এরপর ইসি নতুন তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র ও কাউন্সিলর এবং দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলর, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ জানুয়ারি। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র বাছাই হবে। বাছাইয়ে যোগ্য প্রার্থীরা ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারবেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি হবে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।