গাজীপুরের কালীগঞ্জে এক জেলেকে হত্যা করে লাশ জালে পেঁচিয়ে ইট-পাথর বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবিয়ে দেওয়ার ১৫ দিন পর মঙ্গলবার বিকেলে নিহতের লাশ নদী থেকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরীরা। নিহতের নাম বোরহান উদ্দিন (৪৫)। সে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ নারগানা এলাকার আলী আজগরের ছেলে। এদিকে অপর ঘটনায় নিহত কালিয়াকৈরের এক মার্কেটের কেয়ার টেকারের ঝুলন্ত লাশ একইদিন উদ্ধার করেছে পুলিশ।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আবু বকর, জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান খান ওরফে ফারুক মাস্টার ও বোরহানের শ্যালক মো. মামুন জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ নারগানা এলাকার জেলে বোরহান উদ্দিন প্রতিদিনের মতো পরিমল, কমল ও পাপন চন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ধরতে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে নৌকায় চড়ে জাল দিয়ে নদীতে মাছ ধরার এক পর্যায়ে সে নিখোঁজ হয়। পরদিন বোরহান বাড়িতে না ফেরায় তার পরিবারের লোকজন আশে-পাশে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করতে থাকে। কিন্তু কোথাও সন্ধান না পেয়ে তার পরিবার ৬ জানুয়ারি পলাশ থানায় ও ৭ জানুয়ারি কালীগঞ্জ থানায় পৃথক দু’টি জিডি করেন। মঙ্গলবার এলাকাবাসীর সহযোগীতায় পরিমল ও তার ছেলে পাপনসহ অলককে সন্দেহজনক ভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান ফারুক মাষ্টার আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা পূর্বশত্রুতার জেরে বোরহানকে হত্যা করে লাশ জালে পেঁচিয়ে ইট-পাথর বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে পানিতে ডুবিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করে। পরে আটককৃতদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আটককৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরীরা নিখোঁজ বোরহানের সন্ধানে শীতলক্ষ্যা নদীতে দু’দিন ব্যাপী তল্লাশী চালিয়ে বুধবার বিকেলে নৌকার সঙ্গে জাল দিয়ে পেঁচিয়ে হাত-পা বাঁধা তার অর্ধ গলিত লাশ ওই নদী থেকে উদ্ধার করে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি আরো জানান, এ ঘটনায় কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ নারগানা এলাকার পরিমল (৫০), তার ছেলে পাপন (২০) ও তাদের প্রতিবেশি অলককে (৩০) গ্রেফতার করেছে। রাতে নিহতের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।

চেয়ারম্যান আরো জানান, এক বছর আগে নৌকা ও জাল চুরির ঘটনা নিয়ে পরিমলদের সঙ্গে বোরহানের শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এর জেরে তারা বোরহানকে হত্যা করে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নদীতে তল্লাশী অভিাযান শুরু করে। কিন্তু অন্ধকার হওয়ায় সন্ধ্যায় তারা নদীতে তল্লাশী অভিযান স্থগিত করে। পরদিন বুধবার এ অভিযান আবার শুরু করা হলে বিকেলে হাত-পা বাঁধা বোরহানের অর্ধ গলিত লাশ নদী থেকে উদ্ধার করে ।

এদিকে বুধবার কালিয়াকৈরের এক মার্কেটের ছাদ থেকে ওই মার্কেটের কেয়ার টেকারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম শরাফত আলী (৫৫) তার বাড়ি নওগাঁ জেলায়।
কালিয়াকৈর থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজার এলাকার চান মিয়া সুপার মার্কেটের ছাদে বুধবার ওই মার্কেটের কেয়ার টেকার শরাফত আলীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।