আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ তার বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে আনা হয়েছে। শনিবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টায় মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি তার বাসভবনে এসে পৌঁছায়।এ সময় তার পরিবারের সদস্য, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘদিনের সেই পরিচিত বাসায় ফিরলেন কফিনে বন্দি হয়ে তখন সেই বেইলি রোডের বাসায় সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। সবারই চোখ-মুখে বিমর্ষতা। প্রিয় নেতাকে, সহকর্মীকে শেষবার তার বাসায় শ্রদ্ধা জানানোর অপেক্ষা ছিলেন। তিনি ক্যান্সারের কাছে হার মেনে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে ৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সৈয়দ আশরাফের মরদেহ বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইট মেঘদূতে শনিবার (০৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ভিআইপি টার্মিনাল লাগোয়া রানওয়েতে অবতরণের পর বিমানের কার্গোভল্ট থেকে নামানো হয় তার মরদেহ।

সেখানে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্ত্রিপরিষদের অন্যান্য সদস্য, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মরদেহ গ্রহণ করেন। সেখানে থেকে মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে সরাসরি নেওয়া হয় সৈয়দ আশরাফের বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে। সন্ধ্যা ৭টায় বেইলি রোডের বাসায় পৌঁছে তার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স। সেখানে আগে থেকেই নেতাকর্মীরা অপেক্ষা করছেন। শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাকর্মী, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনসহ তার অনুসারীরা বেইলি রোডের ২১ নম্বর বাসায় এসেছেন। সন্ধ্যার পর থেকেই অনেক নেতা কর্মীরা তার বাসায় এসেছেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিকভাবে উনার কাছে আমি অনেক কিছু শিখেছি। সত্যিই তাকে ভোলা যাবে না। আদর্শের দিক থেকে তিনি কখনো সরে আসেনি। তিনি সহজ সরল জীবনযাপন করতেন। রাজনীতির আদর্শের জন্য তাকে আওয়ামী লীগসহ অন্য কেউ ভুলতে পারবে না। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন।সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ তার বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে নিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হবে। রোববার (৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর হেলিকপ্টারে করে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কিশোরগঞ্জে। দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।এরপর তৃতীয় নামাজে জানাজা দুপুর ২টায় ময়মনসিংহের আঞ্জুমান ঈদগাঁ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে মরদেহ ঢাকায় নিয়ে এসে বাদ আছর বনানী কবরস্থানে দাফন হবে।