বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সঙ্গে নিয়ে দেশের গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করতে যাচ্ছে।নির্বাচন কমিশনার বলছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং রয়েছে। আমরা বলছি, দেশে নির্বাচনি পরিবেশে কোনও লেভেল প্লেয়িং নেই। আমাদের কথা নাকি অসত্য। কিন্তু আমরা দেখেছি ২০১৪ সালের মতো আওয়ামী লীগ সরকার তত্ত্ববধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে সরকারে থেকে নির্বাচন দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসতে চাইছে, যা সম্পূর্ণ গণতন্ত্রবিরোধী। বর্তমানে দেশে মানুষ স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে বাস করছে। জনগণের ভোটে আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশ স্বৈরাচারী সরকার থেকে মুক্তি লাভ করবে এবং গণতন্ত্র ফিরে পাবে।

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার রেদোয়ান আহমেদ কলেজ মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক পথসভায় ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের গান গেয়ে যিনি টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ছুটে বেড়িয়েছেন, তাকে আজ এই স্বৈরাচারী সরকার অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগার ভোগ করাচ্ছে। তাকে নির্বাচনও করতে দিচ্ছে না। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারবে না বলেই আজ এমনটি করছে। পুলিশ, র‌্যাবসহ সর্বস্তরের প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হামলা, মামলা এবং হয়রানি করছে। নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় আমাদের প্রার্থীদের মাঠে নামতে দিচ্ছে না।এ সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভুয়া নির্বাচন কমিশন ও সরকার মিলে দেশকে জবাই করেছে। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রকারী দল। তারা নানা কৌশলে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র করুক, বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যাবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাকি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাস করবো। এই নির্বাচন নির্ধারণ করবে আমরা আমাদের স্বকীয়তা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবো কিনা।

তিনি বলেন, আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে এ সরকার। তারা জোর করে ক্ষমতায় ঠিকে আছে। নির্বাচনের সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা অনৈতিক। সব রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করেছে। দেশবাসী এদের সব ষড়যন্ত্র জনগণ রুখে দেবে।

লাঠি আর মামলা করে জনগণকে ঠেকানো যাবে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা নির্বাচনকে ভয় পায়। অপনারা খালেদা জিয়ার মনোনীত প্রার্থী রেদওয়ান আহমদকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। এ নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন বানাতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। জনগণকে বোকা ভাববেন না। জনগণের ঐক্যে সবকিছু ছারখার হয়ে যাবে। জনগণের কাছে কোনো চক্রান্তই কাজ হবে না। ৩০ ডিসেম্বর সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, এখন টাকা আর আওয়ামী লীগ ছাড়া চাকরি পায় না। আমরা ক্ষমতায় গেলে চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত বেকার ভাতা চালু করবো। বিনা পয়সায় নাগরিকদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করবো। দাড়ি-টুপি পরলেই নাকি জঙ্গি, এটা তার ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। চান্দিনা ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মফিজুল উদ্দিন ভূইয়ার সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন এলডিপির সহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ। আরও বক্তব্য রাখেন, চান্দিনা উপজেলা জামায়াতের আমির এ কে এম আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।