বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকার সংবিধান ও জনগণকে ভয় পায়। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন সম্ভব, সেটিও তারা করতে চায় না। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে সরকারের এমপিরা নিজ নিজ এলাকায় যেতে পারবেন না। তাদের অপকর্মের কারণে জনগণ তাদের প্রতিরোধ করবে। তারা পরাজিত হবেন। এ কারণেই তারা সংসদ না ভেঙে নির্বাচনের কথা ভাবছেন।
নির্বাচন কমিশন সরকারের অনুগত বলে অভিযোগ করেন তিনি বলেন, কমিশনের প্রতি মানুষের কোন আস্থা ও বিশ্বাস নাই। প্রতীক বরাদ্দের আগেই শহরে ও সারা দেশে নৌকা মার্কা প্রতীক ব্যবহার করে প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে।এগুলো নির্বাচন কমিশন দেখে না।কারণ এ কমিশন সরকারের অনুগত।শুক্রবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্সে লাউঞ্জে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু হওয়ার কথা। তবে এখনই প্রতীক দিয়ে পোস্টার বানানো ও তার প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে। প্রতীক বরাদ্দের আগেই বিভিন্ন শহরে ও সারাদেশ রঙিন পোস্টারে ভরে গেছে। এসব পোষ্টারে নৌকার প্রতীক ব্যবহার করে লেখা হয়েছে নৌকা মার্কায় ভোট দিন, অমুককে ভোট দিন। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও এই প্রচারণা চলছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি এ সময় অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের এসব চোখে পড়ে না। কারণ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বাড়ি থেকে সুরঙ্গ পথ ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশনে যাওয়া-আসা করে। তাই রাস্তাঘাটে ও বিভিন্ন জায়গায় লাগানো এসব পোস্টার ও ব্যানার- ফেস্টুন তাদের চোখে পড়ে না। যদি এগুলো তাদের চোখে পড়তো, তাহলে তারা আইন অনুযায়ী এগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতো।ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এ বিষয়ে সংসদে কোনও বিল পাস হলো না, অথচ রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি পাশ করিয়ে নেওয়া হলো। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেছেন শহরগুলোতে সীমিতভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে শরহগুলোতে আওয়ামী লীগের হারার সম্ভাবনা বেশি। কারণ শহরে সচেতন মানুষের বাস। আর ওইখানেই এই যন্ত্র ব্যবহার করা হবে, যাতে করে চুরি করে পাশ করিয়ে দেওয়া যায়। অথচ যে যন্ত্রটি বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ বাতিল করে দিচ্ছে সেটা আমাদের দেশে ব্যবহার করার এত জুনুন কেন?বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার মুক্তির বিষয়ে সংবিধানের কোথায় বাধা আছে? হাইকোর্ট তাকে জামিন দিল, কিন্তু নিম্ন আদালত জামিন দিতে পারলো না। যে মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হলো না ওই মামলায় অন্যরা জামিনে আছেন।তিনি উপস্থিত সবার উদ্দেশে এ সময় বলেন, ভাবেন একবার, অভিযোগ যে- খালেদা জিয়া হুকুম দিয়েছেন, আর কুমিল্লার কিছু লোক গাড়িতে আগুন দিয়েছে এবং সেখানে লোক মারা গেছে। হুকুম দিয়েছেন বলে তার জামিন হবে না। তিনি তো তখন আটক ছিলেন গুলশান অফিসে। সেখানে তখন আমিও ছিলাম। বিদ্যুতের লাইন কাটা ছিল, ফোনের লাইন কাটা ছিল, খাবার ঢুকতে পারত না, আমাদের অনেকে খাবার নিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে। সেখান থেকে কিভাবে সে হুকুম দিলেন? সেই হুকুমের আসামি হিসেবে তার জামিন হলো না? তিনি বলেন, এই পরিস্থিতির বিষয়ে আমরা ২০ দল আলোচনায় বসবো। আরেকটি জোট হয়েছে সেখানেও আমাদের ২০ দলের নেতৃবৃন্দ যুক্ত আছেন। সেখানেও সিদ্ধান্ত হবে। আর সেই সিদ্ধান্ত আগামী দিনে আমাদের দাবি মানার জন্য যথোপযুক্ত হবে। যে সিদ্ধান্ত হবে সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা আগামী দিনের লড়াই-সংগ্রাম করবো এবং দেশকে লুটেরাদের হাত থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করবো।জাগপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- জাগপার সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, জাগপা’র কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি আবু মোজাফফর মো. আনাছ, রকিব উদ্দিন চৌধুরী মুন্না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান খান, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, বেলায়েত হোসেন মোড়ল প্রমুখ।