নতুন একটি আদেশে প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করলে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা অবৈধ অভিবাসীরা আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।ইন্টেরিম ফাইনাল রুল নামের ওই আদেশের ফলে প্রেসিডেন্টের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা লংঘন করে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা ব্যক্তিরা আর আশ্রয় পাবেন না, জানিয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রেসিডেন্ট চাইলে ‘জাতীয় স্বার্থে’ অভিবাসন প্রক্রিয়া আটকাতে পারেন বলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা, খবর বিবিসির।চলতি বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রচারে অবৈধ অভিবাসীদের আটকাতে কার্যকর একটি অভিবাসন প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মধ্য আমেরিকা থেকে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পানে ছুটে আসা হাজারও অভিবাসনপ্রত্যাশীর ক্যারাভানের দিকেও ছুড়েছিলেন একের পর এক তীর।ওই ক্যারাভান ঠেকাতে সীমান্তে সৈন্যও পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট; মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়তে চাওয়াকে অভিহিত করেছেন বহিঃশত্রুর আক্রমণ হিসেবে।ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাথিউ হোয়াইটেকার ও স্বরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান কার্সজেন নিয়েলসন বৃহস্পতিবার ‘ইন্টেরিম ফাইনাল রুল’ নিয়ে এক যৌথ বিবৃতি দেন।

এতে বলা হয়,সকল বহিরাগতের প্রবেশ স্থগিতের’ এবং ওই বহিরাগতদের মার্কিন স্বার্থের জন্য ‘ক্ষতিকারক’ মনে হলে অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনে তাদের ওপর ‘উপযুক্ত যে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়ার’ ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের রয়েছে।এর ফলে, প্রেসিডেন্ট যদি যুক্তরাষ্ট্র- মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ দেন, সেক্ষেত্রে যারাই ওই সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকবে, তাদের আশ্রয় প্রার্থনারও সুযোগ থাকবে না।

প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের স্থগিতাদেশ লংঘন কিংবা আশ্রয় প্রার্থনার যোগ্যতায় সীমাবদ্ধতা আছে এমন বহিরাগতদের আটকাতে কংগ্রেস যে ক্ষমতা দিয়েছে আজ আমরা তা ব্যবহার করতে যাচ্ছি,” বিবৃতিতে এমনটাই বলা হয়েছে।বিস্তৃত আকারে এই আদেশ কার্যকর হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে তারা।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বল্প সময়ের মধ্যে এ আদেশে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন, জানিয়েছে বিবিসি।নিজ দেশে সহিংসতার শিকার হতে পারেন এমন আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থনা করা যে কারও আবেদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে মার্কিন আইনে। এর ফলে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের আবেদনও বিবেচনায় নিতে হতো মার্কিন প্রশাসনকে। ট্রাম্প ‘ইন্টেরিম ফাইনাল রুল’ আদেশে স্বাক্ষর করলে এ বাধ্যবাধকতা এড়াতে পারবে তারা। প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসা আশ্রয় প্রার্থনাকারীদের শরণার্থী’ হিসেবে বিবেচনার আন্তর্জাতিক নিয়মের বদলে মার্কিন প্রশাসনের নিতে যাওয়া নতুন এ পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে বিভিন্ন সংগঠন।আমেরিকান সিভিল লিবার্টি ইউনিয়ন একে অবৈধ হিসেবে অ্যাখ্যা হয়েছে।হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও ট্রাম্প প্রশাসনের এ অমানবিক পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছে।