প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, আপনার যে পোষা প্রাণীগুলো আছে তাদের থেকে সাবধান থাকেন। তা না হলে এটা দেশের বিপদ, সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
শনিবার (৩ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এই কথা বলেন। জাফরুল্লাহ বলেন, সরকারের অনেক বাবুরা আছেন যারা চাইবে খালেদা জিয়ার নামে অকারণে মামলা দিয়ে হাসিনাকেই জনসম্মুখে হেয় করতে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, আপনার যে পোষা প্রাণীগুলো আছে তাদের থেকে সাবধান থাকেন। তা না হলে এটা দেশের বিপদ।
দেশে শান্তি, সুশাসন চাইলে জাফরুল্লাহ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা প্রধানমন্ত্রী কয়েকবার বলেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন করা সহজ, কারণ আমি বলেছি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যেসব মামলা আছে তা ফৌজদারি মামলা। বিষয়টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজনীতির কারণে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করাই উদ্দেশ্য।
খালেদা জিয়ার সুবিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমি সবসময় বলেছি, আমি মামলা প্রত্যাহার চাই না। তার প্রতি সুবিচার করা হোক। সুবিচার করতে হলে তার প্রথম শর্ত হচ্ছে তাকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে। তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া সুষ্ঠু নির্বাচন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রথম কদম। আমি সংলাপেও বলেছি, তাকে জামিনে মুক্তি দেন। জামিন দিয়ে বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে, থাকুক।তিনি বলেন, যেই দুটো সাংবিধানিক সমস্যার কথা বলা হচ্ছে- আমি বলেছি এটার জন্য হয়তো একটা মিটিংয়ে হবে না। শাহদীন মালিক, আসিফ নজরুলের মতো যারা আইনজ্ঞ, তাদেরসহ সরকার থেকে দুইজন আইনজ্ঞকে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলে এসবের সুরাহা হতে পারে। দেখতে হবে আটকানোর উদ্দেশ্য কী? আমি কি ইঁদুর বিড়ালের খেলা খেলবো নাকি জাতির মঙ্গলের কথা ভাববো।
জাফরুল্লাহ বলেন, পত্র-পত্রিকায় দেখেছি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সামরিক বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিলে ১/১১ এর পুনাবৃত্তি হবে। আমি প্রশ্ন করি, র্যাবকে ম্যাজিট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া আছে, তারা কি দেশ দখল করে বসে আছে? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন অভিযানে যায় তখন ম্যাজিস্ট্রেট থাকে সঙ্গে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিলে জনগণের মধ্যে বিশ্বাস জন্মাবে।
অন্যদিকে,গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তিনি যোগ দেওয়ার কারণে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওপর আক্রমণ, হামলা ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। শনিবার দুপুরে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আলতাফুন্নেসা এই অভিযোগ করেন।এক প্রশ্নের জবাবে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, তিনি ট্রাস্টি বোর্ডের সাতজন সদস্যের একজন সদস্য মাত্র। এই অবস্থান থেকে তিনি আর সরে আসবেন না। তিনি বলেন, যেকোনো পরিবর্তনের জন্য জনগণকে মূল্য দিতে হয়। এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও তাঁর কর্মীরা সেই মূল্য দিচ্ছেন।সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিভিন্ন ধরনের হামলা ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও র্যাবের অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়।সাংবাদিকদের জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, হামলা-মামলা সবই হয়েছে পূর্বপরিকল্পিতভাবে।জাফরুল্লাহ চৌধুরীর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি।