বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেমকে সোমবার বেলা দেড়টার দিকে নগরের জিইসি মোড় থেকে আটক করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। নসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে ঐক্যফ্রন্টের সভা শেষে তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে খেতে যান। সেখানে রাস্তা থেকেই তাঁদের আটক করেন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।
কী কারণে তাঁদের আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি পুলিশ। গতকাল রোববার কোতোয়ালি থানায় করা একটি মামলায় এ দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে বলে জানান উপকমিশনার (ডিবি উত্তর) মেহেদী হাসান।ডিবির সহকারী কমিশনার এস এম মোবাশ্বের হোসাইন বলেন, ওই দুই নেতাকে জিইসি মোড় এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ নিয়ে গেছে।২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামে ঐক্যফ্রন্টের মহাসমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে। মহাসমাবেশকে সামনে রেখে আজ সোমবার দুপুরে কাজীর দেউড়ির নসিমন ভবনের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির অপর ভাইস চেয়ারম্যানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
যেকোনো মূল্যে চট্টগ্রামে ২৭ অক্টোবর বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে চায় তাঁরা। সমাবেশ করার জন্য শান্ত থাকার কৌশল অবলম্বন করলেও বাধা আসলে চুপ করে থাকবে না বলে এক প্রস্তুতি সভায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।সমাবেশে সরকারের বাধা প্রসঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, চড়াও হওয়ার দরকার নেই, মাথা গরম করার দরকার নেই। তবে কেউ যদি আমাদের গায়ে এসে পড়ে, তাহলে রামকৃষ্ণ মিশনের সদস্যের মতো চুপ থাকব না। যেকোনো মূল্যে সমাবেশ হবে।ড. কামাল হোসেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি উল্লেখ করে সভায় শাহজাহান বলেন, বিএনপি যথেষ্ট আন্তরিক ও ছাড় দিয়ে এই ঐক্যফ্রন্টকে এগিয়ে নিচ্ছে।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আওয়ামী লীগ প্রথমে ঐক্যফ্রন্টকে স্বাগত জানালেও এখন তাদের নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কারণ তারা দেশে আর লুটপাট করতে পারবে না। বাকশাল বানাতে পারবে না। সিলেটে যেমন অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে, তেমনি এখানেও সমাবেশের অনুমতি দিতে বাধ্য হবে।
সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মামুন আহমেদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ উদ্দিন মিজান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সন্দীপের সাবেক সাংসদ মোস্তফা কামাল পাশা, নগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম প্রমুখ বক্তব্য দেন।প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে এই প্রস্তুতি সভা চলে। সভায় বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য শরিক দলের বিভিন্ন জেলা এবং চট্টগ্রামের নেতারা তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। সভার মাঝপথে জাগপার নগর সভাপতি মোজাফফর মোহাম্মদ আনাছ ঢুকে অভিযোগ করে বলেন, জাগপাকে আজকের প্রস্তুতি সভার বিষয়ে জানানো হয়নি। আমি অন্য মাধ্যমে খবর পেয়ে উপস্থিত হয়েছি।
এ ছাড়া জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম জিলানী চৌধুরী, গণফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ মনছুর, জাসদের নগর সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম, জমিয়তুল উলামা ইসলাম বাংলাদেশের এম এ কাশেম ইসলামাবাদী প্রমুখ তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন।