নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাকক্ষে ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ওই বৈঠকে বসে কমিশন। বৈঠকের পর ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনসে টেরিংক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আশা করি নির্বাচন হবে সব দলের অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের আগে ইইউ বিশষজ্ঞ টিম পাঠাবে। তফসিলের পরে নভেম্বরে তারা দুই সপ্তাহ অবস্থান করে ভোটের পরস্থিতি দেখবে।
বৈঠকের বিষয়ে হেলালুদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু, এবং নিরপেক্ষ হয় সে ব্যাপারে তারা (ইইউ) আহবান জানিয়েছেন।নির্বাচন কমিশন তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন যে, আইনের মধ্যে থেকে নির্বাচন কমিশনের যতটুকু ক্ষমতা রয়েছে সবগুলো ক্ষমতা প্রয়োগ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও একটি নির্বাচন জাতিকে উপহার দেবেন।সচিব বলেন, প্রতিনিধি দল ফ্রি, ফেয়ার, ইনক্লুসিভ, পার্টিসিপেটরি নির্বাচন চেয়েছেন। কমিশন থেকে বলা হয়েছে, আইনের মধ্যে থেকে সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। হেলালুদ্দীন বলেন, ইইউ প্রতিনিধিরা ইভিএম, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, জনবল, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রবাসীদের ভোট দেয়ার প্রক্রিয়া এবং ভোটার তালিকা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।সিইসি তাদের জানিয়েছেন, আইন পাস হলে স্বল্প পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
এদিকে, আগামী সংসদ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংগ্রহণমূলক ভোট গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি তিরিংক।বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও পরিবেশ দেখতে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দুজন প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসবেন। তারা কয়েক সপ্তাহ এখানে অবস্থান করবেন। রেনজি তিরিংক আরো বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য কোনো সহযোগিতার দরকার হলে তা করার জন্য প্রস্তুত ইইউ।বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মধ্যে ইইউ অন্যতম। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চেয়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষণে না আসার ঘোষণা এ সংস্থাই দিয়েছিল। এরপর কমনওয়েলথ ও যুক্তরাষ্ট্র পরে অন্যান্য দেশ ও সংস্থা তাদের পথই অনুসরণ করে। সে সময় সহিংসতার কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি নিয়েও উদ্বিগ্নতার কথা জানিয়েছিল সংস্থাগুলো।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সেই নির্বাচনের কিছুদিন পূর্বে অর্থাৎ ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকেই বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসছে না বলে জানাতে থাকে। ওই নির্বাচনে বিএনপিসহ বেশকিছু দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে নির্বাচনে অংশ নেয়নি।সিইসির ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একেএম মাজহারুল ইসলাম জানান, সাতটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সিইসির সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বৈঠকে অংশ নেন।