এগিয়ে আসছে জাতীয় নির্বাচন। আর এই একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করছে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। মিললেও যেন মিলছে না কোন সমীকরন। কে থাকবে টিকে কে যাবে হারিয়ে সেই হিসাবেও চলছে। শুধু তাই নয় কুড়িগ্রাম-৪ আসনকে ঘিরে জোট, মহাজোট, স্বতন্ত্র, বিদ্রোহ কে হবে শেষ পর্যন্ত কোন প্রার্থী এই হিসাবও মিলাতে পারছেনা ভোটারা। জোট, মহাজোটের একক না একাধিক প্রার্থী থাকছে সে বিষয়েও কোন সিন্ধান্ত দিতে পারছেনা স্থানীয় নেতাকর্মীসহ মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা। এদিকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে একাধিক ব্যাক্তি নিজের প্রার্থী ঘোশানা করলেও দু’চারজন ছাড়া এখনো নির্বাচনী মাঠে নামতে দেখা যায়নি বেশির ভাগ প্রার্থীকে। সবমিলে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মাঠপর্যায়ে শুরু হয়েছে নানা সমীকরণ। বিগত নির্বাচনের তুলনায় চলছে ভিন্ন ভিন্ন হিসাব-নিকাশ আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। কে কোন দলের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন বা কে কোন দলের হয়ে আসবেন সেটি নিয়ে এখন চলছে আলোচনা। এদিকে মাঠে গনসংযোগ, মতবিমিনিয়, শোডাউনসহ প্রচারে ব্যাস্ত সময় পার করাসহ প্রচারনায় এগিয়ে আছেন সাবেক এমপি গোলাম হাবিব ও অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গির আলম। এছাড়াও অন্যান্য প্রার্থীরা নিচ্ছেন কৌশল।
চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম-৪ আসন। আসনটি বিভক্ত হয়ে ছিল ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তা আবারো পুনরায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসায় জনগনের মাঝে শান্তি ফিরে এলেও প্রার্থীদের প্রচারণা ও হিসাব নিকাশ পুরোপুরি পাল্টে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভিন্নরূপ। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৯ হাজার ২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৭১৭ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৮৫ জন। পরিসংখ্যান মতে, এ আসনে বরাবরই জাতীয় পার্টির আধিপত্য। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে এ আসনে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম হোসেন। ২০০১ সালেও নির্বাচনেও জয় পায় দলটি। সেবার দলটির প্রার্থী ছিলেন সাবেক বন প্রধান গোলাম হাবিব। সাবেক এই বন প্রধান চাকুরীরত অবস্থায় এলাকার মানুষের পাশে থেকে এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় এলাকার বেশ সুনাম অর্জন করার কারনেই প্রথম বারেই বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী একক থাকার কথা থাকলে তা হয়ে না ওঠায় মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির গোলাম হাবিব ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাকির হোসেন নির্বাচিন অংশ নেয় এই নির্বাচনে বিভিন্ন দলের প্রার্থী থাকার কারনে এবং আওয়ামী লীগের চারদিকে জয়ের ধ্বনীর থাকায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে হারিয়ে জয় পান আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পরবর্তি ২০১৪ সালে বিভিন্ন অভিযোগ উঠায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাকির হোসেনকে হারিয়ে জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রার্থী রুহুল আমীন জয় লাভ করেন। আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টি (জেপি) দখলে যাওয়ায় আগামী নির্বাচনে এ আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া জাপা এছাড়াও দৌড় ঝাপেও রয়েছেন আওয়ামী লীগ। এদিকে জোটের কারণে ১৯৯১ থেকে একবারও প্রার্থী দিতে পারেনি বিএনপি। তবে রাজনৈতিক মেরূকরণে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঘুরে দাড়াতে চায় দলটি। দলীয় প্রার্থীর জয় নিয়েও আশাবাদি দলটি। এ অবস্থায় আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে চুলচেরা বিশ্লেষণে ব্যস্তরাজনৈতিক দলগুলো। সম্ভাব্য প্রার্থীরা কৌশলে প্রচারণার পাশাপাশি দলের সমর্থন আদায়ে করছেন লবিং। ভোটারদের অভিমত, যোগ্য প্রার্থীকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন তারা। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন মূখী রয়েছেন, সদ্য জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে পার্টির চেয়ারম্যানের কূটনৈতিক উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রদূত আশরাফ-উদ দৌলা তাজ, রাজিবপুর জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মো. ইউনুছ আলী ও রৌমারী জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য রুহুল আমিনও তালিকায় রয়েছেন বলেও আলোচনায় উঠে আসছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জেপি) রুহুল আমিনকে মহাজোটের প্রার্থী ঘোষণা করায় অধ্যক্ষ মো. ইউনুছ আলী (জাতীয় পার্টি) পার্টির সিদ্ধান্তে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। মনোনয়ন প্রত্যাশি এই তিন প্রার্থীর বাইরে জাতীয় পার্টি (জেপি) সংসদ সদস্য রুহুল আমিনকে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে দেখা যেতে পারে। সম্প্রতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের চিলমারী সফরে জাতীয় পার্টি (জেপি) থেকে নির্বাচিত বর্তমান এমপি রুহুল আমিনকে নিয়ে তার দেয়া বক্তব্যে এমন সমীকরণ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সুত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা জানান, গত নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৩ আসন থেকে গোলাম হাবিবকে মনোনয়ন দিয়ে শেষ মহুর্তে তা প্রত্যাহার করে নেয়ায় অনেকটা ক্ষোভে দল ত্যাগ করেন সাবেক এ সংসদ সদস্য। এরপর থেকে মূলত কুড়িগ্রাম-৪ আসনে তার সম জাতীয় পার্টির কোন নেতা মাঠ গড়ে নিতে পারেনি। গোলাম হাবিব জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করায় এই অঞ্চলে এক প্রকার ধ্বস দেখা দেয় জাতীয় পার্টিতে এছাড়াও দলের বেশ কিছু নেতাকর্মীও গোলাম হাবিবের সাথে যোগদেন নব গঠিত বাংলাদেশ সততা দলে। সম্প্রতি সাবেক রাষ্ট্রদূত আশরাফ-উদ দৌলা তাজ জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়ালেও অজ্ঞাত কারনে সেভাবে নেতা-কর্মীরা তাকে মেনে নেয়নি। এরমধ্যে রৌমারী উপজেলা জাতীয় পার্টি একটি অংশ তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে। জাতীয় পার্টির নেতারা আরো জানান, আশরাফ-উদ দৌলা তাজ রাজনৈতিক ভাবে দূরদর্শিতার পরিচয় দেখাতে পারেননি। এরশাদের সফরেই তিনি যে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে পারতেন, এখানে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তারা বলেন, এরশাদের সফরে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে সেভাবে উদ্দীপনা দেখা যায়নি। উপজেলার সর্বত্র যে সাজ সাজ রব থাকার কথা ঠিক তার উল্টো হয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যানের আসার পথ এমনকি তাজ সাহেবের বাড়ীর সামনেও গোলাম হাবিবের পোষ্টার সাটানো ছিলো। গত ১৯ আগষ্ট সাবেক রাষ্ট্রদূত আশরাফ-উদ দৌলা তাজ’র চিলমারী বাসভবনে মধ্যাহ্নভোজে আসেন পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। এসময় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার বক্তব্যকে ঘিরে নানা সমীকরণ দেখা দেয়। তবে আশরাফ-উদ দৌলা সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি নিশ্চিত মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে প্রচার করলে তা আবারো ভিন্ন রূপ নিতে পারে বলেও অনেকে ধারনা করছেন। রাজিবপুর জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ ইউনুছ আলী জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। এদিকে এ আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী হওয়ায় নেতাকর্মীরা দ্বিধাদ্বন্দে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সু-সংগঠিত করার চেষ্টার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
চিলমারী উপজেলা আ.লীগ সভাপতি ও চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম নির্বাচনী এলাকায় শুভেচ্ছা বিনিময়ে অনেকের মতো তিনিও দেয়ালে সাটিয়েছেন ছবি সম্বলিত পোস্টার। কিন্তু তাঁকে জনসমাগম করতে দেখা না গেলেও চিলমারী আওয়ামীলীগে বেশ আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে তাঁকে ঘীরে। কিছু দিন আগে মহানমুক্তিযুদ্ধের রাজাকারপুত্রের পদোন্নতির সুপারিশ করায় তা দেশের বিভিন্ন অনলাইন-অফলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় বেশ সমালোচনার স্বীকার হয়েছিলেন তিনি। ভোটারদেরমতে৪বারের সফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েও উপজেলার চোখে পড়ার মতো কোন উন্নয়ন না হওয়ায় এলাকায় তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নি¤œগামী হয়ে পড়ে ফলে গত নির্বাচনে তাঁকে মাত্র সাড়ে এগার হাজার ভোট পেয়ে সামান্য ভোটেই জয়লাভ করতে হয়েছে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে। তাছাড়াও তাঁর একঘেয়ামীর কারণে এ উপজেলায় প্রশাসনযন্ত্রটি বিকল। এ উপজেলায় কোন অফিসার আসতে চান না। ১ বছরেই একাধিকবার অফিসারের রদবদল হয়েছে এ উপজেলার শীর্ষপদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদসহ বিভিন্ন পদে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের দেয়াল ঘেষেই তাঁর বাসভবন হলেও সেখানেই স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়ম চলমান। অল্পদিন আগেই হাসপাতালে এসে ডাক্তার না পেয়ে জরুরী বিভাগেই মৃত্যু হয় রওশন আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির, যার ফলে এলাকাবাসী মিছিল, মানববন্ধনসহ বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করলেও কোন উন্নতি হয়নি এ সেবা খাতের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী নেতা বলেন, চেয়ারম্যান শুধু উপজেলা পরিষদই নয়, ছয়টি ইউনিয়নেইটিআর, কাবিখা ভুয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তিনি দুর্নীতির অভয়ারন্য হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
কুড়িগ্রাম ৪ আসনের নির্বাচনমূখী রয়েছেন- সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ জাকির হোসেন, রৌমারী উপজেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলাম মিনু, রৌমারী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গির আলম, চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান কে এম ফজলুল হক, রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী, রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল আলম, অধ্যক্ষ ফজলুল হক মনি ও চিলমারী উপজেলা আ.লীগ সাংগঠকি সম্পাদক রহিমুজ্জামান সুমন। চিলমারী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয় লাভ করাসহ উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ে দ্বিগুন ভোট নেয়ার ব্যাপারে মাঠে বেশ কাজ করে দলের ভাবমুর্তি উজ্জল রাখার চেষ্টা করেন। এদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গির আলম ভোটাদের সাথে মতবিনিময় ও বিভিন্ন স্থানে গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন খুব জোড়েসোরেই এছাড়াও বিভিন্ন দূর্যোগের সময় জনগনের পাশে দাঁড়ানোসহ তাদের খোঁজ খবর নেন এবং স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথেও যোগাযোগ রাখার চেষ্টা চালানোর সাথে সাথে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথেও যোগাযোগ রাখছেন। এবং চিলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমেরিকা প্রবাসী প্রবাসে থাকলেও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করাসহ প্রচারনায় কৌশল নিয়ে চেষ্টায় রয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জানান, ২০০৯ সালের নির্বাচনে রৌমারী উপজেলা আ.লীগ সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এ আসনে দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন করতে পারেননি। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, অর্থের বিনিময়ে ডিও লেটারে সহি সহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। এ কারণে ২০১৪ নির্বাচনে জনগণের নিকট জাতীয় পার্টির (জেপি) সাইকেল প্রতীকে রুহুল আমিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আ.লীগ সভাপতি শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম বলেন, চিলমারী উপজেলা আ.লীগ সুসংগঠিত। চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও আমাকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে দেখতে চায়। আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলে ইনশা আল্লাহ নৌকা মার্কা বিপুল ভোটে জয়ী হবে। সাবেক সংসদ সদস্য মো. জাকির হোসেন বলেন, রৌমারী রাজিবপুর ও চিলমারীতে আমার ব্যাপক জনসমর্থন বেড়েছে। এ তিন উপজেলার মানুষ আমাকে নৌকা প্রতীকে দেখতে চায়। তিনি আরো জানান, মনোনয়ন পেলে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের হারিয়ে জয়ী হব। অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গির আলম বলেন মানুষ এখন বুঝতে শিখেছে তারাও চায় তরুন ও নুতুন মুখ আর মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ জনগনের কাছে যাওয়ায় তাদের পাশে দাঁড়ানোর আমি সেই নির্দেশ পালন করছি। আমি আশা করি মনোনয়ন পেলে আমি এই আসনটি আওয়ামী লীগ তথা প্রধান মন্ত্রীকে বিজয় আসন হিসাবে উপহার দিতে পারবো । চিলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক রহিমুজ্জামান সুমন বলেন জনগন চায় তরুন প্রজম্ম আর নুতুন মুখ আমি কুড়িগ্রাম-৪ আসনের নৌকা প্রতিক পাওয়ার আশাবাদী দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় আমি অবহেলিত এলাকার জন্য কাজ করবো। পরিবর্তনের জন্য তরুনদের দরকার এছাড়াও মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকেই মনোনয়ন দিবেন আমি তার হয়েও কাজ করবো। এদিকে এ আসনটি জামায়াতের ভোটব্যাংক, দাবি দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের। বিগত নির্বাচনে জোটগত ভাবে তাই এ আসনে বিএনপি জামায়াতকে সমর্থন দেয়। কিন্তু দলটির প্রার্থী একবারও জয়ী হতে পারেনি। এবারের নির্বাচনে বিএনপি কৌশলী হতে পারে। বিভিন্ন সুত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ আসনে জামায়াতের মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাক’কে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া বিএনপি থেকে নির্বাচন মূখী রয়েছেন, চিলমারী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ বারি সরকার, ,নয়ার হাট ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু হানিফরৌমারী বিএনপি’র সভাপতি আজিজুর রহমান, রাজিবপুর বিএনপি’র সভাপতি অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান। তবে দলটির সাংগঠনিক দুর্বলতা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজিবপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান জানান, বিগত নির্বাচনে জোটগত ভাবে জামায়াতকে মনোনয়ন দেয়া হলেও ভাল ফল আসেনি। এবারের নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি’র নেতাকর্মীদের দাবি যেন বিএনপি থেকে বিশ দলীয় জোটের প্রার্থী করা হয়। এবারে নির্বাচনে তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন। চিলমারী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আঃ বারী সরকার বলেন জনগন বুঝতে পেরেছে বিএনপি সরকার দরকার আর আমি মনোনয়ন পেয়ে এই আসটি দলকে উপহার দিবে পারবো ইনশাআল্লাহ। সিনিময় সহ-সভাপতি ও নয়ারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা জানান আমি ধানের শীষ নিয়েই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি আমি জনগনের ভালোবাসা পেয়েছি আশা করি আমি মনোনয়ন পেয়ে জয়ী হব । জামায়াতের মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাকও বিশ দলীয় জোটের মনোনয়ন চাইবেন। তাকে মনোনয়ন দেয়া হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। অপরদিকে এ আসনে ভোটের মাঠের ট্রাম্পকার্ড নব গঠিত বাংলাদেশ সততা দলের চেয়ারম্যান সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম হাবিব। গত ২০১৪ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৩ আসন থেকে তাকে মনোনয়ন দিয়ে শেষ মহুর্তে তা প্রত্যাহার করে নেয়ায় অনেকটা ক্ষোভে দল ত্যাগ করেন এবং নব গঠিত বাংলাদেশ সততা দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তবে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তা নিবন্ধিত না হওয়ায় নির্বাচনী মাঠে স্বতন্ত্র হিসেবে বর্তমান থাকলেও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তিনি প্রাধান্য। এই আসনের জন্য তিনি বড় ফ্যাক্টর। বিভিন্ন সুত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সুত্রমতে, শেষ মহুর্তে সাবেক এ সংসদ সদস্যকে নৌকা, লাঙ্গল অথবা ধানের শীষের প্রতীকেও নির্বাচনী মাঠে দেখা যেতে পারে। সম্প্রতি তিনি প্রধান দলগুলোর কাছে নিজের শক্তিমত্তা দেখাতে বিশাল শোডাউন করেছেন। বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় করছেন নির্বাচনী প্রচারণা ও গনসংযোগ। সাধারণ ভোটাররাও চাইছেন, গোলাম হাবিব যেন প্রধান তিন দলের যে কোন একটি প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে থাকেন। তাহলে তিনি নির্বাচনী বৈতারণি সহজে পেরিয়ে যাবেন। ইতি মধ্যে তিনি স্বতস্ত্র প্রার্থী হিসাবেও ভোটের মাঠে বেশ বড় জায়গাও করে নিয়েছেন। এ বিষযে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম হাবিব দুলাল বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণের পাশে সব সময় ছিলাম, থাকবো। আমি সব সময় চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুরের উন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করেছি। এ তিন উপজেলার মানুষের ভালোবাসাও পেয়েছি। আগামী নির্বাচনে আমাকে আবারও সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চায় এখানকার জনগণ। সবকিছু ছাপিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন বা সমর্থন দিতে গিয়ে জটিল হিসাব-নিকাশের মুখে পড়তে হবে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে। দল ও জোটের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সহযোগীও রয়েছেন যারা এই আসনটিতে সমঝোতা চান। এদিকে জোট ও মহাজোটে প্রার্থী চুড়ান্তে নানা সমীকরণ দাড়ালেও চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুরের ভোটারদের অভিমত, এবারের নির্বাচনে তারা সৎ, যোগ্য ও মানুষের ভাগ্যান্নয়নে নিবেদিত এমন প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।