মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা সহ সর্ব অঞ্চলের মানুষেরই প্রানের প্রধান দাবি পদ্মা সেতু নির্মাণ। এ সেতু নির্মিত হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২৩ টি জেলা সহ এ অঞ্চলে যুগান্তকারী পরিবর্তন ছাড়াও নদী ভাঙ্গন রোধ হবে স্থায়ী ভাবে। এলাকাবাসী আশা করছেন এই সফরে প্রধানমন্ত্রী গ্যাস সংযোগ সহ পর্যটন জোন, মেডিকেল কলেজ শিঘ্রই নির্মান সহ সঠিক দিক নির্দেশনা দিবেন। পাশা পাশি মাওয়ার পার্শ্ববর্তী মেদেনীমন্ডলে জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মানের ঘোষনাও আশা করছে এলাকাবাসী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৩ টায় খানবাড়ী গোল চত্তরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ আয়োজিত সভায়। পদ্মা সেতুর রেলের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, ষ্টেজে প্রধান অতিথির ভাষন দেবেন,এর আগে শেখ হাসিনা ২৮ মে লৌহজংয়ের মাওয়ায় এসেছিলেন এছাড়াও তিনি ২০০১ সালের ১২ জুলাই লৌহজংয়ের কুমার ভোগ এলাকায় পদ্মা সেতু নির্মান কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের জন্য এসেছিলেন। এর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার ও আসছেন দ্বীতীয়বার এক’ই স্থানে। লৌহজংয়ের খানবাড়ী গোল চত্তরে। গতওই সময়ে কুমারভোগ মাঠে বিশাল জনসভায় ভাষণে অনেক প্রত্যাশার বীজ রোপন করেছিলেন তিনি। তার প্রতিফলন ও চাচ্ছে এ এলাকার মানুষ। সর্বশেষ তিনি ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের সময় মুন্সিগঞ্জের বালিগাঁও আমজাদ আলী কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এর পর সরকার গঠন করার ৪ বছর পর গত ২৮ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লৌহজংয়ের মাওয়ায় আসেন। তার আগমন উপলক্ষে প্রত্যাশা জানতে চাইলে লৌহজংয়ের বাসিন্দা আঃ রশিদ শিকদার বলেন, পদ্মা সেতুর সঠিক দিক নির্দেশনা সহ মাওয়াকে পর্যটন জোন হিসেবে ঘোষনা দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা করি।লৌহজংয়ের স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আশরাফ হোসেন বলেন, ঢাকার এত কাছে থাকা সত্বেও এখনও গ্যাস পাইনি। তবে এইবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী গ্যাস দিয়া যাইবো। নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত আলী মিয়া বলেন, পদ্মায় জেগে উঠা বিশাল চড়ে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নমূলক কোন প্রকল্প গ্রহনের ঘোষনা দিলে আমি ও আমরা খুশি হব।

পাশা পাশি প্রকৃত মালিকদের জমি বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানান এলাকাবাসি।স্থানীয় সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এম পি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাটি ও মানুষের কথা চিন্তা করে। তাই তিনি এই অঞ্চলের মানুষের সব যুক্তিক দাবি পুরণ করবে। তিনি মনে করেন গ্যাস সংযোগের পাশাপাশি এই অঞ্চলে একটি মেডিকেল কলেজ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত। সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে লৌহজংয়ে আনন্দের বন্যা বইছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর লৌহজং বাসীর জন্য আর্শিবাদ হতে পারে।মাওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে চূড়ান্ত নিরাপত্তা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।আজ মঙ্গলবার পদ্মাসেতু প্রকল্প সার্ভিস ওয়ান এ। সকাল ৯টায় এসময় উপস্হিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ ৩ আসনের মাননীয় সংসদসদস্য ও সেন্ট্রাল আওয়ামীলীগ এর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস।সেন্ট্রাল আওয়ামীলীগ এর ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হক নওফেল চৌধুরী। মুন্সীগঞ্জ ২ এর মাননীয় সংসদসদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগ এর সিনিয়র সহঃসভাপতি অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি।মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর (আগমন উপঃ) দায়িত্ব প্রাপ্ত চীফ সিকিউরিটি অফিসার কর্নেল সাদী। পুলিশ সুপার মোহম্মাদ জায়েদুল আলম। ও লৌহজং উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাঃ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শিকদার সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তাবৃন্দ।সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শায়লা ফারজানা।এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও মাওয়া একদিনের সফরে আসছেন তিনি। এ উপলক্ষে বিলবোর্ড, ব্যানার আর ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে পুরো মাওয়া নগরী।শেখ হাসিনার আগমনে উচ্ছ্বসিত জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।আয়োজকরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমনে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।এখন প্রকল্প এলাকায় চলছে বিশাল নির্মাণযজ্ঞ। অন্যদিকে পদ্মা সেতুর রূপকার বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেওয়ার ব্যস্ততা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের খবরে এ এলাকার মানুষের মনে বইছে আনন্দের হাওয়া। তাদের প্রাণের দাবি পদ্মা সেতুসহ সকল কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তাই প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান ও স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এলাকাবাসী।

এদিকে, বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে বহু আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু। হাজারও মানুষের ঘামে-শ্রমে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে মূল সেতুর নির্মাণ কাজ। পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হবে,এবং সূচিত হবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় নবইতিহাসের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা মনোভাব এবং ঐকান্তিক চেষ্টায় শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণযজ্ঞ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে আগমন উপলক্ষে ষ্টেজ ও তোরণ নির্মাণসহ ব্যাপক প্রস্তুতি এবং নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুতি শেষ হলে আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষামাত্র। লৌহজং উপজেলার মেদেনীমন্ডল ইউনিয়নের খান বাড়ি এলাকায় ৭ একর জায়গায় জনসভাস্থল নির্ধারণ ও জনসভাস্থলের উত্তর প্রান্তে স্টেজ নির্মাণের কাজ চলছে। চলছে ঢাকা-মাওয়া সড়কে তোরণ নির্মাণের কাজ। লাগানো হচ্ছে বড় বড় ব্যানার ফেস্টুন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে স্থানীয় আওযামী লীগ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর কাজ করে যাচ্ছেন।জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, আগামী ১৩ অক্টোবর রোজ শনিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর রেলের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন । দেশি ও আন্তর্জাতিক যেসব ষড়যন্ত্র ছিল সমস্ত কিছু চ্যালেঞ্জ করে নেত্রী এ ব্রীজ করছেন। কি ভাবে সভাকে জনসমুদ্রে রুপান্তর করা যায় সে লক্ষে কাজ করা হচ্ছে। লৌহজং, শ্রীনগর, সিরাজদিখান, টঙ্গিবাড়ি সহ মুন্সীগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি থাকবে এ সভায়।