হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো শারদীয়া দূর্গাপূজা। আর সেই দূর্গা পূজা উপলক্ষে ফরিদপুর জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চলছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা। পূজা উপলক্ষে জেলার সাড়ে সাত শতাধিক মন্দিরে মন্দিরে চলছে এখন প্রতিমা তৈরির কাজ। জেলার অধিকাংশ মন্দিরে দো-মাটির কাজ শেষে এখন চলছে রং তুলির প্রথার্মধের কাজ। জেলার পাল সম্প্রদায়ের কারিগররা এখন রাতদিন ব্যস্ত প্রতিমা ফুটিয়ে তোলার কাজে।
৯ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শারদীয়া দূর্গোৎসবের শুভ সূচনা হবে। এরপর ১৪ অক্টোবর হবে দূর্গার বোধন ১৫ অক্টোবর মহা ষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে শুরু হবে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা যা শেষ হবে ১৯ অক্টোবর দশমী দেবীর বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে। এরই মাঝে জেলার প্রতিটি মন্দির সাজতে শুরু করেছে নানা আয়োজন নিয়ে। ফরিদপুরের ধোপাডাঙ্গা এলাকার সিআইপি যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়িতে বৃহৎ পরিসরে প্রায় আড়াইশ প্রতিমা নিয়ে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পৌরাণিক কাহিনী মহা ভারত ও রামায়ণের গল্পকথা যেন মূর্ত হয়ে উঠেবে ফরিদপুরের ধোপাডাঙ্গার যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়ির দুর্গোৎসবে। এখানে দেবী দুর্গার প্রতিমা ছাড়াও স্থান পাবে প্রায় আড়াইশ প্রতিমা।
মৃৎশিল্পীরা দুই মাস ধরে রাত-দিন পরিশ্রম করে রামায়ণ ও মহা ভারতের কাহিনীকে যেন বাস্তবে নামিয়ে আনার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যতিক্রমী এই পূজার আয়োজন দেখতে পূজার আগে থেকেই এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা।
প্রতিমাশিল্পী সুকুমার পাল জানান, দুই মাস ধরে রামায়ণ ও মহা ভারতের মূল কাহিনী ফুটিয়ে তুলে ধরার কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন আশার করছি আমরা মহা ষষ্ঠীর আগের দিন সম্পন্ন করা হবে প্রতিমা তৈরি ও মন্ডপের সাজসজ্জ্বার কাজ। প্রতিমা কারিগররা জানান এটি দেশের কয়েকটি সেরা পূজার মধ্যে একটি। পূজার প্রধান আয়োজক যশোদা জীবন দেবনাথ সিআইপি জানান, দেবী দুর্গা, কার্তিক, গণেশসহ প্রায় আড়াইশ প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে দেশের অন্যতম বড় পরিসরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি এই পূজা দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসবে। সব কিছু মিলিয়ে এবার আমাদের এই পূজার আয়োজনে কোনো কিছুই অপূর্ণ রাখা হবে না মহাভারত ও রামায়ণের গল্প কথায়। এছাড়াও ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা শরৎ সাহার বাড়ী, পুরাতন বাসষ্টান্ডের দুটি পূজা, কাসার পট্্ির, সোনার পট্রি, শিবরামপুরের তপন ডাক্তারের বাড়ীর পূজা সাজছে নানা আয়োজন নিয়ে। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক সুকেশ চন্দ্র সাহা বলেন, এবার জেলার নয়টি উপজেলায় সাড়ে সাত শতাধিক মন্দিরে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ফরিদপুর দূর্গা পূজার জন্য সারাদেশে মধ্যে অন্যতম। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ জাকির হোসেন খানঁ বলেন, শান্তিপূর্নভাবে দূর্গা পূজা শেষ করতে সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করা হয়েছে। মন্দির গুলোতে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসারসহ মোবাইল টিম কাজ করবে। নিরাপত্তা দিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে পূজা মন্ডপ গুলোতে।এবার ফরিদপুরের নয় উপজেলার সাড়ে সাত শতাধিক মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।