ইন্দোনেশিয়ায় শুক্রবার ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের পর শক্তিশালী সুনামিতে ৩৮৪ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ওই ভূমিকম্পের পর সুলাওয়েসি দ্বীপের পালুতে তিন মিটার (১০ ফুট) পর্যন্ত ঢেউ আছড়ে পড়েছে। খবর বিবিসির। শনিবারও পালুতে ভূমিকম্প পরবর্তী শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে। শুক্রবারের ভূমিকম্পে হাসপাতাল, হোটেল ও শপিং সেন্টারসহ হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষ উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। ভূমিধসের কারণে পালুতে যাওয়ার প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ এজেন্সি জানিয়েছে, ভূমিকম্প ও সুনামিতে কমপক্ষে ৩৮৪ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও ৩৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলেও জানাচ্ছে তারা। এর আগে শুক্রবার আরেক অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভূমিকম্পে ডোঙ্গালায় একজন নিহত এবং আরও অন্তত ১০ জন আহত হয়।
দুর্যোগ এজেন্সির মুখপাত্র সুতপো পুরও নুগরোহো বলেছেন, যেহেতু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, তাই আমরা পুরো তথ্য পাইনি। সুনামির কারণে অধিকাংশ মৃতদেহই উপকূলের তটরেখায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু হতাহতের সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। তবে ভূমিকম্প নাকি সুনামির কারণে এই ব্যক্তিরা নিহত হয়েছে সেটি স্পষ্ট নয়। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষজন চিৎকার করছে এবং ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। ওই ভিডিওতে বিভিন্ন ভবনের সঙ্গে একটি মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা যায়।
টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে, খোলা আকাশের নিচে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্পে শত শত আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
দেশটির একজন মন্ত্রী বলেছেন, যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে এবং পালুর মুতিয়ারা সিসি আল-জুফরিয়ে বিমানবন্দরের রানওয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে রাজধানী জাকার্তা থেকে কার্গো বিমানে করে ত্রাণ পাঠানো শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
এর আগে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানায়, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার কিছুটা আগে সেন্ট্রাল সুলাওয়েসি থেকে অল্প দূরে ওই ভূমিকম্প আঘাত করে। এটির গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। এদিকে ওই ভূমিকম্প আঘাত হানার পরপরই সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। যদিও এক ঘণ্টা পর সেই সতর্কতা তুলে নেয়া হয়। গেল মাসে ইন্দোনেশিয়ার লোম্বক দ্বীপ সিরিজে ভূমিকম্প আঘাত করে। তবে এর মধ্যে ৫ আগস্ট সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৪৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। এর আগে ২০০৪ সালে একটি ভূমিকম্পের পর শক্তিশালী সুনামির আঘাতে দুই লাখ ২৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে এক লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ ইন্দোনেশিয়ার ছিল।