বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর বাণিজ্যিক কার্যক্রমে পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ স্যাটেলাইট কোম্পানি থাইকম।এজন্য সম্প্রতি থাইল্যান্ড স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত থাইকম পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) একটি বহু-বার্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।চুক্তির আওতায় থাইকম বিসিএসসিএলকে ২০১৮ সালের ১১ মে সফলভাবে উৎক্ষেপিত বাংলাদেশের প্রথম জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর সমন্বিত বাণিজ্য ও বাজার উন্নয়ন সেবা দেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ডিজিটাল বৈষম্য হ্রাস করা ও ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার জাতীয় লক্ষ্যে এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যেমন স্যাটেলাইট সংশ্লিষ্ট চাহিদা পূরণ হবে তেমনি বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ও এশিয়ার অন্য দেশে সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ সুবিধার প্রবর্তন করবে। দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার অভিযানেও সহায়তা করবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে থাইকম ৮টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। থাইকম স্যাটেলাইটগুলো থেকে এসডি ও এইচডি ফরম্যাটে একহাজারের বেশি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারিত হয়।
চার মাস আগে উৎক্ষেপিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সম্প্রতি সাফ ফুটবলের খেলাগুলো সফলভাবে সরাসরি সম্প্রচার করছে বাংলাদেশ টেলিভিশন। খেলার সম্প্রচার স্বত্ব পাওয়া একটি বেসরকারি স্যাটেলাইট স্টেশনে সম্প্রচারের লিংক থেকে বিটিভিতে তা প্রচার করছে।এর মধ্য দিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অক্টোবরের মাঝামাঝিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর আশাপ্রকাশ করেছেন বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।গত ১২ মে ভোররাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।
স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায়।বিটিআরসির নেওয়া তিন হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পের আওতায় ফরাসি প্রতিষ্ঠান তালিস এলিনিয়া স্পেস এই স্যাটেলাইট তৈরি করে, এর উৎক্ষেপণ হয় যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের মাধ্যমে।সরকারের আশা, বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, এ উপগ্রহের মাধ্যমে সেই অর্থ সাশ্রয় হবে।বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে, যার ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে এবং বাকিগুলো ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।