রাজধানীর রায়েরবাজার,কক্সবাজারের উখিয়া ও পাবনার আতাইকুলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে ও আজ মঙ্গলবার সকালে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজধানীর রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, আজ সকালে রায়েরবাজারে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজন পড়ে আছে—এমন খবর পায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। থানার এসআই আনিসুর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য সকাল পৌনে ৭টার দিকে গুলিবিদ্ধ দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। তাঁদের আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসক জানান।
এসআই আনিসুর রহমানের বরাত দিয়ে এসআই বাচ্চু জানান, গতকাল রাত সোয়া ৩টার দিকে র্যাব-২-এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয় দুর্বৃত্তদের। এ ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়। মরদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার: উখিয়া উপজেলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।আজ ভোরে কক্সবাজারের শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের (কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ) মরিচ্যাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। র্যাব-৭-এর কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মো. মেহেদী হাসান এ তথ্য জানান।নিহতরা হলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডু এলাকার আবদুস সামাদ (২৭) ও যশোরের অভয়নগর এলাকার মো. আবু হানিফ (৩০)।মেজর মেহেদী হাসান বলেন, শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কে উখিয়ার মরিচ্যাবাজার এলাকায় স্থাপিত র্যাবের অস্থায়ী চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশি চলছিল। এ সময় টেকনাফের দিক থেকে আসা একটি ট্রাক পৌঁছামাত্র র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালানোর চেষ্টা করে। র্যাব সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়ে। এতে ট্রাকে থাকা দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ সময় ট্রাকটি তল্লাশি করে এক লাখ ৩০ হাজার ইয়াবা বড়ি, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশি বন্দুক, আটটি গুলি ও আটটি গুলির খোসা পাওয়া যায়।
নিহত ব্যক্তিরা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং তাঁদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলে দাবি করেন র্যাবের এই কর্মকর্তা। মেজর মেহেদী জানান, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পাবনা : জেলার আতাইকুলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কোরবান হোসেন (৩৬) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, বন্দুকযুদ্ধে নিহত কোরবান চরমপন্থী সংগঠন নকশাল বাহিনীর আঞ্চলিক নেতা ছিলেন। তিনি আতাইকুলার যাত্রাপুর গ্রামের বাসিন্দা।আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, রাত দেড়টার দিকে খবর আসে যে আতাইকুলা থানার কৈজরী গ্রামের সোবহানের কাঁঠালবাগানে একদল চরমপন্থী সন্ত্রাসী গোপন বৈঠক করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল ওই স্থানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন কোরবান হোসেন বলে পরিচয় শনাক্ত করেন।ওসি মাসুদ রানা আরো জানান, এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মন্টু হোসেন, ফারুক হোসেন, কনস্টেবল আবদুর রউফ ও শাহীন আলী। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি রিভলবার, চারটি কার্তুজ, দুটি কার্তুজের খোসা, ২০টি ইয়াবা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। নিহত কোরবানের বিরুদ্ধে আতাইকুলা ও পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া থানায় হত্যা-ডাকাতিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।