আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠাতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অপরদিকে, রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
এর আগে গত ৭ আগস্ট এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট শহিদুল আলমকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে ৯ আগস্টের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে ৮ আগস্ট হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন জানায়। পরদিন ৯ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ১৩ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেছিলেন। অন্যদিকে শহীদুল আলমকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা করে ৯ আগস্ট হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সে অনুযায়ী, সোমবার আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন হলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ইতিমধ্যে আদেশটি পালন হয়ে গেছে। এখন আমাদের আবেদনটি অকার্যকর।’
এ সময় রিটকারী আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘শহিদুল আলমকে নির্যাতনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে (হাইকোর্ট) স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সে আদেশ এখনো প্রতিপালন করা হয়নি।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিষয়টি হাইকোর্টের।’ সারা হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আদালতের নজরে আনলাম।’ আদালত বলেন, ‘চাইলে বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনতে পারেন। পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।’
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের মধ্যে ‘উস্কানিমূলক মিথ্যা’ বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা এক মামলায় গত ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। এরপর তাকে নির্যাতন ও রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ গত ৭ আগস্ট রিট করেন।