রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় নেমে আসা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুদের কাছ থেকেও অনেক সময় শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যে অনিয়ম রয়েছে, সেসব জায়গায় উন্নয়নের আরও সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে যা দেখিয়ে দিয়েছে, সেটা আমরা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করব।’ আজ বৃহষ্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাকালে মনিরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছে, তাদের তো আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। সড়কের যে বিদ্যমান সমস্যা, তাও রাতারাতি দূর করা সম্ভব নয়। তাই আমরা অনুরোধ করছি ছাত্রছাত্রীরা কোনো রকম উসকানিতে কান না দিয়ে বাসায় ফিরে যাক।’
লাইসেন্স পরীক্ষা করাসহ সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শিক্ষার্থীদের নতুন উদ্যোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম অনেক ছিল। এগুলো দূর করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু ট্রাফিক আইন না মানার সংস্কৃতি, সড়কের অপ্রতুলতা, নাগরিক অসচেতনতা, যত্রতত্র রাস্তা পার হওয়া, ওভারব্রিজ ব্যবহার না করা এসব কারণে পুরোপুরি শৃঙ্খলা ফেরাতে বিলম্ব হচ্ছে।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কিছু শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমেছে এবং তারা গাড়ি পরীক্ষা করছে। এ কারণে নগরীতে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এরই মধ্যে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাসমালিক ও শ্রমিকেরা দূরপাল্লার এবং শহরের মধ্যকার বাস চলাচল কমিয়ে দিয়েছেন। এতে অসুস্থ রোগী, বিদেশগামী যাত্রী ও হজযাত্রীদের সমস্যা হচ্ছে। এটা কাঙ্খিত নয়।’
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় এক ধরনের স্বার্থান্বেষী লোকজন মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। গাড়ি চেকিংয়ের নামে একদল সুযোগসন্ধানী এখন পর্যন্ত প্রায় তিনশ গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আটটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। পাঁচটি পুলিশের গাড়ি ভেঙেছে।’
পুলিশের গাড়ি পরীক্ষা ও লাইসেন্স না পাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিরুল বলেন, ‘পুলিশের গাড়ি চালানোর সঙ্গে যুক্ত সব চালকের লাইসেন্স আছে, এটা নিশ্চিত। তবে লাইসেন্স পরীক্ষা করার ক্ষমতা শুধু পুলিশ ও বিআরটিএ এর রয়েছে। পুলিশই যেহেতু লাইসেন্স দেখে, তাই অনেকেই তা সঙ্গে রাখেননি। আবার অনেকেই পরিবহন শাখায় রেখে দেন। ভবিষ্যতে যার যার লাইসেন্স, তার তার কাছে রাখার কথা ভাবছেন তারা। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্তে একটি আদেশও জারি করেছে ডিএমপি সদরদপ্তর।’