রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মীম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম। মীমের বাবার নাম জাহাঙ্গীর ও করিমের বাবা মৃত নূর ইসলাম। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। এ সময় যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উত্তরাগামী জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস মিরপুর ফ্লাইওভার থেকে নেমে অপর একটি বাসের সঙ্গে পাল্লা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মরদেহ কুর্মিটোলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস বনানী-এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে উত্তরার দিকে যাচ্ছিল। হোটেল রেডিসনের উল্টোদিকে শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। এ সময় শিক্ষার্থী জাবালে নূর বাসে উঠার চেষ্টা করে। বাসটি না থামিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ২ শিক্ষার্থী নিহত হন।
কুর্মিটোলা হাসপাতালের সহকারি পরিচালক লে. কর্নেল মো. ছগির মিয়া জানান, খিলক্ষেত থেকে ছাত্রদের জাবালে নুর ( ঢাকা মেট্রো-১১৯২৯৭) গাড়ি তুলে দেওয়া হয়েছিল, এদিকে সহপাঠীদের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। এ সময় ২০-২৫টি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে করছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান জোনের এডিসি আবদুল আহাদ জানান, ঘটনাস্থল থেকে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চালক ও হেলপারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ এমইএইচ বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে খিলক্ষেত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে দুই পাশের সড়কে শতাধিক যানবাহনের গ্লাস ভাঙচুর করে এবং জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ক্যান্টনমেন্ট থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রেজাউল জানান, আজ দুপুরের দিকে এই ঘটনার পর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এসে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ শুরু করে। সেখানে তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
এএসআই বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা র্যাডিসন হোটেলের সামনের রাস্তায় যেখানে ইউটার্ন গ্যাপ রয়েছে, সেখান থেকে রাস্তা পার হচ্ছিল। অনেকে বাসের জন্য ফুটপাতে অপেক্ষা করছিল। এ সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস শিক্ষার্থীদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। এদিকে, বাসচাপায় চার শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। যদিও এ ব্যাপারে পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে বাস ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধের ফলে এয়ারপোর্ট সড়কে বেশ কিছুক্ষণ যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। দুই পাশে প্রচণ্ড যানজট সৃষ্টি হয়।