নওগাঁর রাণীনগরে এক গৃহবধূকে দেশীয় অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে প্রায় তিন লাখ টাকা লুট করার ঘটনা ঘটেছে। টাকা দেওয়ার কথা প্রকাশ করলে নগ্ন ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করা হয়েছে ওই গৃহবধূকে।
বর্তমানে এই ঘটনাটি এলাকায় এক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। গত ১ জুলাই সকালে উপজেলার একডালা ইউনিয়নের নারায়ণপাড়ার উত্তরপাড়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনার সঠিক বিচার করার নামে ইউপি চেয়ারম্যান মো: রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে শালিসী বৈঠক করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউনিয়নের নারায়ণপাড়ার উত্তরপাড়া গ্রামের মো: আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মহসিন আলী (১৮) গত ১ জুলাই সকালে একই গ্রামের একটি বাড়িতে প্রবেশ করে ওই বাড়ির গৃহবধূকে একা পেয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্রের (চাকুর) মুখে তাকে জিম্মি করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে গৃহবধূর কাছ থেকে প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা লুট করে স্বর্ণালংকার দাবি করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে গৃহবধুকে। এসময় গৃহবধূ কৌশল করে মহসিনকে বাহিরে রেখে ঘরে ঢুকে প্রতিবেশিদেরকে ডাকতে লাগে। স্থানীয়রা তার ডাকে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে মহসিনকে অন্য ঘরের খাটের নিচে থেকে হাতে-নাতে আটক করে। এসময় একই গ্রামের মৃত-তমেজ উদ্দিনের ছেলে মো: শহিদুল ইসলাম (৩৫) সহায়তায় মহসিন ওই গৃহবধূর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এছাড়া শহিদুল ইসলামের সহায়তায় গৃহবধুর বাড়িতে প্রবেশ করে মহসিন। ঘটনাটি জানা জানি হওয়ার পর একডালা ইউপি চেয়ারম্যান মো: রেজাউল ইসলামের বাহিনী মহসিনকে আবাদপুকুর বাজারে ধরে ব্যাপক মারপিট করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকই জানান, মোবাইল ফোনে ধারনকৃত ভিডিও’র মেমোরি কার্ডটি মহসিনের কাছ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: রেজাউল ইসলাম কৌশল করে নিয়ে নেয়। গৃহবধুর স্বামী চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ভিডিও’র মেমোরি চাইলে তাকে না দিয়ে চেয়ারম্যান ধারনকৃত ভিডিও ডিলিট করে ফেলে। এরপর সঠিক বিচার করে দেয়ার কথা বলে মহসিনকে ছেড়ে দেয়। ওই রাতেই নারায়ণপাড়া গ্রামে চেয়ারম্যনের নেতৃত্বে একটি শালিস ডাকে,শালিশে কোন সমাধান না করে এক সপ্তাহ পর আবার শালিস বসার কথা বলেন। সে দিনও কোন সমাধান না করে সম্প্রতি পূণরায় শালিস ডাকা হয়। ওই শালিসে এলাকার মাছ চুরির ঘটনা জুরে দিয়ে আসল ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে লাগলে শালিসে স্থানীয়রা ব্যাপক হট্টগোলের সৃষ্টি করলে ওই দিনও বিষয়টি সমাধান না করে চেয়ারম্যানসহ সবাই চলে যান। এতে করে মহসিনের পক্ষ থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে চেয়ারম্যান সঠিক বিচার করছেন না এবং বিচারের নামে সময় পার করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

এ ব্যাপারে একডালা ইউপি চেয়ারম্যান মো: রেজাউল ইসলাম বলেন, এগুলো কথা মিথ্যা। এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত ভুক্তভুগির পরিবারের পক্ষ থেকে কোন প্রকার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।