হঠাৎ করেই দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনের পালে হাওয়া লেগেছে। প্রায় ৮ মাস পর মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। আর বুধবার লেনদেন আরও বেড়ে ১১শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা গত বছরের ২০ নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ।
লেনদেনের এমন উলম্ফনের দিন ডিএসই ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। আবশ্য লেনদেনের শুরুতে সূচকের বড় উত্থানের সঙ্গে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি।বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও এদিন ব্যাংক খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৩টিরই শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫টির।তবে ব্যাংক খাতের এ প্রভাব পড়েনি অন্য খাতের ওপর। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় কমেছে। বিপরীতে বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৫৩টি। আর ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।অবশ্য শুরুতে লেনদেনে অংশ নেয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। ফলে প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক প্রায় ১০০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু শেষ ঘণ্টায় একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দাম কমতে থাকে। তবে কিছুটা ব্যতিক্রম থাকে ব্যাংকগুলো।ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৭৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯১৫ পয়েন্টে অবস্থা করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার দিনে ডিএসইতে চলতি বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। বুধবার বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১১৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এর আগে গত বছরের ২০ নভেম্বর ডিএসইতে ১ হাজার ১৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এর পর গত ৮ মাসের মধ্যে বাজারটিতে আর ১১শ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়নি।লেনদেনের এমন রেকর্ডের দিনে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বসুন্ধরা পেপারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা পেনিনসুলা চিটাগাংয়ের ৩৪ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩২ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আরএসআরএম স্টিল। লেনদেনে এরপর রয়েছে- বিবিএস কেবলস, বেক্সিমকো, লিগাসি ফুটওয়্যার, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, কনফিডেন্স সিমেন্ট এবং ব্র্যাক ব্যাংক।অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ১০ হাজার ৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৫০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২২টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির।