প্রায় সাতাশ বছর পর বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন জাহাজ ‘এম ভি বাংলার জয়যাত্রা’। এর সঙ্গে চলতি বছরের শেষ দিকে আরও পাঁচটি জাহাজ যুক্ত হবে নৌ বহরে। পাশাপাশি এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আরও ছয়টি জাহাজ কেনার পরিকল্পনা করেছে সরকার।নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৩৯ হাজার ডেড ওয়েট টন (ডিডব্লিউটি) ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বাল্ক ক্যারিয়ারের ‘বাংলার জয়যাত্রা’ জাহাজটি চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) তৈরি করেছে। চীনের জিয়াংসু প্রদেশের ওয়াক্সি শহরে সিএমসির শিপইয়ার্ড ‘জিয়াংসু নিউ ইয়াংজি শিপবিল্ডিং কোম্পানি লিমিটেডে’ এটি নির্মিত হয়েছে।গত এপ্রিলে ওই শিপইয়ার্ডে জাহাজটির লাঞ্চিং ও নামকরণ হয়েছে। নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান জাহাজটির লাঞ্চিং ও নামকরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর ইয়াহইয়া সৈয়দ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম. এম. তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম-প্রধান রফিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং বিএসসি’র পরিচালক (কারিগরি) মোহাম্মদ সায়েদ উল্লাহ।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় ১ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএসসি’র জন্য ছয়টি জাহাজ সিএমসি নির্মাণ করছে। এতে চীন সরকার দিচ্ছে ১ হাজার ৪৪৮ কোটি এবং বিএসসি দিচ্ছে ৩৯৫ কোটি টাকা। ছয়টি জাহাজের মধ্যে তিনটি অয়েল ট্যাংকার ও তিনটি বাল্ক ক্যারিয়ার। প্রতিটির ধারণ ক্ষমতা ৩৯ হাজার ডিডব্লিউটি।নৌসচিব মো. আবদুস সামাদ বলেন, বাংলার জয়যাত্রাসহ দুটি জাহাজ আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশে আসবে বলে আশা করছি। বাকি চারটি আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে আসবে। ইতোমধ্যে দুটি জাহাজের ট্রায়াল রান হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সফলভাবে পানিতে ভেসেছে জাহাজ।এরপরই আসবে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। এ দু’টি ছাড়াও বাকি জাহাজগুলো হলো-‘বাংলার অর্জন’, বাংলার অগ্রযাত্রা’, ‘বাংলার অগ্রদূত’ ও ‘বাংলার অগ্রগতি’।নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিএসসির বহরে এক সময়ে ৩৬টি জাহাজ ছিল, বর্তমানে রয়েছে মাত্র দুইটি-বাংলার অগ্রযাত্রা ও বাংলার অর্জন। নতুন ছয়টি জাহাজ ছাড়াও আরও নতুন করে জাহাজ কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে নৌসচিব বলেন, আমরা চেষ্টা করছি নতুন ছয়টি জাহাজ কেনার। ট্যাংকার ও বাল্ক ক্যারিয়ার রয়েছে। এলএনজি পরিবহনের কাজেও ট্যাংকার ব্যবহার করা যাবে। আশা করছি এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নতুন আরও ছয়টি জাহাজ যুক্ত হবে। জাহাজগুলো আসলে নৌ পরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে আশা করছেন নৌ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।