পরের রাউন্ডে যেতে শেষ ম্যাচ কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা জানতে নাইজেরিয়া-আইসল্যান্ড ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়েছে আর্জেন্টিনার। যাদের জয়ে সবচেয়ে উপকার, সেই নাইজেরিয়া কিন্তু হতাশ করেনি মেসিদের! আর্জেন্টিনাকে রুখে দেয়া আইসল্যান্ডকে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় রাউন্ডের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি সুপার ঈগলরা টিকিয়ে রাখল আর্জেন্টাইনদের নকআউটের হিসাব-কেতাবও।
ভলগোগ্রাদ অ্যারেনায় শুক্রবার আহমেদ মুসার জোড়া গোলে আইসল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে নাইজেরিয়া। তাতে নাইজেরিয়ার পয়েন্ট হল দুই ম্যাচে ৩। আর আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করা আর্জেন্টিনার দুই ম্যাচে পয়েন্ট এক। সমান ম্যাচে আইসল্যান্ডের পয়েন্টও একই। দুই ম্যাচে টানা জিতে ক্রোয়েশিয়ার পয়েন্ট সেখানে ৬।
গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে ২৬ জুন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে লড়বে নাইজেরিয়া। একইদিনে ক্রোয়েশিয়া-আইসল্যান্ড মুখোমুখি হবে। সেদিন মেসিদের হারাতে পারলেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত সুপার ঈগলদের। ড্র করলেও সম্ভাবনা থাকবে। সেক্ষেত্রে চেয়ে থাকতে হবে ক্রোয়েশিয়া-আইসল্যান্ড ম্যাচের দিকে।
ওই ম্যাচে আইসল্যান্ড ড্র কিংবা হারলেই পরের রাউন্ডের টিকিট কাটা হয়ে যাবে আফ্রিকান জায়ান্টদের। আর আর্জেন্টিনা যদি নাইজেরিয়াকে হারাতে পারে, অন্য ম্যাচে যদি আইসল্যান্ড হারলেই নকআউটে যাবে মেসিরা। আর ড্র করলে মেসিদের জিততে হবে বড় ব্যবধানে। এদিন ম্যাচে খেলেছে আইসল্যান্ড-নাইজেরিয়া, কিন্তু চাপ থাকল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উপরও! গ্যালারি থেকে কিছুক্ষণ পরপর ভাইকিংস হুঙ্কার ছুঁড়ল আইসল্যান্ডের সমর্থকরা। ম্যাচেও পড়ল সেটার প্রভাব।
প্রথম ৪৫ মিনিটে ৬৫ শতাংশ বল নাইজেরিয়া দখলে রাখল ঠিকই, কিন্তু প্রতিপক্ষ রক্ষণে চাপ ধরে রেখেছে আইসল্যান্ড। ছয় মিনিটে সিগার্ডসনের শট সুপার ঈগলদের রক্ষণদের একবারে কাঁপিয়ে দেয়। ৩৬ থেকে বিরতির অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত বডভারসন ও জারনাসন জুটি যেভাবে খেলেছেন তাতে গোল হজম না করাকেই সৌভাগ্য মনে করতে পারে নাইজেরিয়া।
পরের ৪৫ মিনিট ঠিক তার উল্টো। এই অর্ধে প্রতিপক্ষকে বেশিভাগ সময়ই চাপে রেখেছে নাইজেরিয়া। ৪৯ মিনিটে করে ফেলে গোলও। নিজেদের অর্ধ থেকে ক্ষিপ্রগতির এক কাউন্টার অ্যাটাকে আহমেদ মুসার দিকে ক্রস করেন ভিক্টর মোজেস। সেই ক্রসকে গোলে রূপান্তর করতে ভুল করেননি মুসা।
আট মিনিট বাদেই দ্বিতীয় গোল প্রায় হজম করে বসেছিল আইসল্যান্ড। ৫৭ মিনিটে ওনিইনিয়ে এনদিদির দূরপাল্লার শট গোলরক্ষক হলডরসন ফিরিয়ে না দিলে বিপদ বাড়ত। মুসার পা দিয়েই নাইজেরিয়া পেয়েছে দ্বিতীয় গোল। ৭৪ মিনিটে তাকে গোলবঞ্চিত করেছিল গোলবার, সেই জ্বালা ভুলে পরের মিনিটে একক নৈপুণ্যে আইসল্যান্ডের দুই ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লেস্টার সিটি থেকে ধারে সিএসকে মস্কোতে যাওয়া এ ফরোয়ার্ড।
আইসল্যান্ড ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল চার মিনিট বাদেই। ফিনবোগারসনকে নিজেদের ডি-বক্সে ফেলে দিয়ে আইসল্যান্ডকে পেনাল্টি উপহার দিয়েছিলেন ট্রাইওনে ইবুইহি। সিগার্ডসন নিতে আসেন শট। কিন্তু তার স্পট-কিক উড়ে চলে যায় বারের একহাত উপর দিয়ে। সেই পেনাল্টি হাতছাড়া হওয়ার পর যেন ম্যাচের আশাও ছেড়ে দেয় আর্জেন্টিনাকে ১-১ গোলে আটকে দেয়া দলটি।