মেসিডোনিয়া নাম নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিতর্কের নিরসনে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে গ্রিস ও মেসিডোনিয়া। দেশ দুটির মধ্যকার এই চুক্তির মাধ্যমে গ্রিসের প্রতিবেশি দেশটির নতুন নাম হবে রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া। মেসিডোনিয়ার নাম পরিবর্তনের এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন গ্রিস ও মেসিডোনিয়ার দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস এবং মেসিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জোরান জায়েভ।
এ চুক্তি সই অনুষ্ঠান হয় মেসিডোনিয়া ও আলবেনিয়া সীমান্তের পাশে উত্তর গ্রিসের প্রেসপাতে। গ্রিক প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস এই চুক্তি স্বাক্ষরকে গ্রিসের জনগণের জন্য সাহসী, ঐতিহাসিক এবং প্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছেন। বলকান রাষ্ট্রের দেশ দু’টি প্রায় তিন দশক ধরে মেসিডোনিয়ার নাম নিয়ে আলোচনা করছে। নাম পরিবর্তনের চুক্তি হলেও এখনও উভয় দেশের সংসদের অনুমতি প্রয়োজন। এছাড়াও মেসিডোনিয়ায় একটি গণভোটেরও প্রয়োজন রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার গ্রিস সরকারের কর্মকর্তারা জানান, গ্রিস সরকার ও মেসিডোনিয়া নাম পরিবর্তনের চুক্তিতে সই করবে। গ্রিসের উত্তরের দেশ মেসিডোনিয়া, যা সাবেক যুগোশ্লাভিয়া নামে পরিচিত। দেশটির বিপক্ষে মেসিডোনিয়া নাম ব্যবহারের দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। গ্রিসের একটি প্রদেশের নামও মেসিডোনিয়া। তিন দশক ধরে আলোচনার পর এই চুক্তি সই করলো দেশ দু’টি। চুক্তিতে নর্থ মেসিডোনিয়া নাম রাখার পাশাপাশি জাতীয়তা, ভাষা, সীমান্ত, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ থাকছে।
১৯৯১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে মেসিডোনিয়ার সঙ্গে গ্রিসের নাম নিয়ে বিবাদ চলছিল। দীর্ঘ ২৭ বছরের বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ১৩ জুন ঐতিহাসিক সমঝোতায় পৌঁছায় দেশ দুটি। যখন যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যায় তখন একটি অংশ নিজেদের নাম রাখে মেসিডোনিয়া। কিন্তু এর দক্ষিণের প্রতিবেশী দেশ গ্রিস তাতে আপত্তি জানায়। কারণ, গ্রিসেও মেসিডোনিয়া নামের একটি অঞ্চল রয়েছে। দুটি দেশের পক্ষ থেকেই মেসিডোনিয়া নামটি তাদের বলে দাবি করা হয়।
গ্রিসের উত্তরাঞ্চলীয় একটি রাজ্যের নাম মেসিডোনিয়া। আবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর নামও মেসিডোনিয়া। গ্রিকদের দাবি, মেসিডোনিয়া নামটি শুধুই তাদের। এ নামে অন্য কোনো দেশ হতে পারে না। এর আগে নাম নিয়ে বিবাদের জেরে মেসিডোনিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে ভেটো দিয়ে আসছিলো গ্রিস।