ঈদের আগে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস। অনেকে অফিসে হাজিরা দিয়েই পরিবার নিয়ে চলে এসেছেন কমলাপুর রেলস্টেশনে। ঈদযাত্রার পঞ্চম দিনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় কমলাপুর স্টেশনে। সকাল থেকে কমলাপুর ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেনই যাত্রীতে ঠাসা।সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশন ছেড়েছে ২৫টি ট্রেন। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী কয়েকটি ট্রেনের বিলম্ব আনন্দযাত্রায় বিষাদ ছড়িয়েছে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। আজ পাঁচটি বিশেষ ট্রেনসহ মোট ৬৯টি ট্রেন ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
লালমনিরহাট ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ছেড়ে যাওয়ার সময় সকাল সোয়া নয়টা। কিন্তু দুপুর ১২টাতেও ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে আসেনি। ওই ট্রেনের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় ছিলেন যাত্রীরা।চিলাহাটির নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা সকাল আটটায়। যাত্রীদের অনেকে ভোর থেকেই স্টেশনে এসে ট্রেনের অপেক্ষায় ছিলেন। বেলা পৌনে ১১টায় ট্রেনটি কমলাপুর আসে। তখনো সেটি যাত্রীতে পূর্ণ। বিমানবন্দর স্টেশন থেকেই অনেক যাত্রী ট্রেনে উঠে বসে আছেন। ট্রেনে উঠতে গিয়ে যাত্রীদের বেশ বেগ পেতে হয়। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যায়।স্ত্রী-সন্তানসহ ভোরে স্টেশনে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হামিদুর রহমান। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সড়কে দেরি হবে ভেবে ট্রেনের টিকিটি কাটলাম। সেটিও তিন ঘন্টা দেরি। সৈয়দপুর পৌঁছাতে রাত নয়টার মতো বেজে যাবে। রাতে যানবাহন পাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে।খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও তা বিলম্ব হয়ে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে ৭টা ২৫ মিনিটে। রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ৫৫ মিনিট দেরি করে ছেড়েছে।
সকাল নয়টায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি দেড় ঘণ্টা দেরি করে সকাল সাড়ে ১০টায় স্টেশন ছেড়ে যায়। দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন আধা ঘণ্টা দেরি করেছে। ট্রেনটি সকাল ১০টার পরিবর্তে সাড়ে ১০টায় ছেড়ে যায়। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা, সেটি ছেড়েছে ২০ মিনিট পর।কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, সকালে পাঁচটি ট্রেন ছাড়া বাকিগুলো সময়মতো ছেড়ে গেছে। ধূমকেতু, সুন্দরবন ট্রেন দুটি দেরি করে স্টেশনে এসেছে। এগুলো ছাড়তেও দেরি হয়েছে। যাত্রীদের চাপে একটি কোচে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, এ কারণে রংপর এক্সপ্রেস ট্রেন দেরি করে ছেড়েছে।সিতাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, রেলের সময়সূচি অনুযায়ী গাড়িতে উঠতে যে সময় লাগে, নামার সময় এর চেয়ে বেশি সময় লাগে। এখন সে সময়ে হচ্ছে না। যেখানে দুই মিনিট সময় দেওয়া আছে, সেখানে ১০ মিনিটও লেগে যায়, যার প্রভাবটা পড়ে।
এদিকে, দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখী মানুষের পদচারণায় তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। ঘাটে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুহূর্তেই ভরে যাচ্ছে সব কটি লঞ্চ। যাত্রীদের ভিড়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো।কেবিন থেকে শুরু করে ডেক, ছাদ এমনকি সিঁড়িতেও বিছানা করে শুয়ে-বসে যাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। বেশিরভাগ লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঢাকা নদীবন্দর ত্যাগ করেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) সকাল থেকেই সদরঘাটে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে যখনই ছাড়ুক না কেন লঞ্চ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ছেন যাত্রীরা। তারা বলছেন, যতই কষ্ট হোক বাড়ি যাচ্ছেন, এতেই আনন্দ।বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি পন্টুনেই যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। পরিবার-পরিজন ও মালামালসহ টার্মিনালে এসেছেন সবাই। কেউ কেউ কেবিন টিকিট না পেয়ে ভোর থেকে টার্মিনালে অবস্থান করছেন।এদিকে যাত্রী ভরে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি লঞ্চ নির্ধারিত সময়ের আগেই ছেড়ে গেছে। এসব লঞ্চের কিছু যাত্রী কেবিনের অগ্রীম টিকিট নিয়েও লঞ্চ ধরতে পারেননি। তাদের একজন তপন। তিনি হাতিয়াগামী তাসরিফ-২ এ ডাবল কেবিন নিয়েছেন। তপন বলেন, ‘লঞ্চটি বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৬টায় ছাড়ার কথা। সেহরির সময় জানতে পারি লঞ্চ সকাল ৮টায় ছেড়ে যাবে। কিন্তু সেই লঞ্চ ভোর ৬টায় সদর ঘাট ছেড়ে গেছে। এতো আগে লঞ্চ ছাড়বে তা আমাদের বলা হয়নি। ৬টা ২০ মিনিটে এসে লঞ্চ পাইনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাসরিফ-২ এর টিকিট ম্যানেজার বলেন, আমরা ৮টায় ছাড়বো বলে যাত্রীদের বলে দিয়েছি। কিন্তু ভোরে ঘাটে আসার পরই লঞ্চ যাত্রীতে ভরে গেছে। পরক্ষণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে লঞ্চ ছাড়তে নির্দেশ দেন। পরে ৬টার দিকে লঞ্চ ছেড়ে দেই।যাত্রীতে ভরে যাওয়ার পরপরই লঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছেজানতে চাইলে বিআইডাব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (বন্দর) একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, সময় মেনে নয়, বরং আমরা কোনও লঞ্চকেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে যাত্রা করতে দেই না। লঞ্চ ভরে গেলেই ছেড়ে যেতে বলা হয়।তিনি জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি। একারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো ছাড়ছে। তবে বরিশাল-হাতিয়া রুটে অতিরিক্ত হিসেবে কয়েকটি বড় লঞ্চ দেওয়া হয়েছে।তিনি আরও জানান, গতকাল বুধবার সদরঘাট থেকে ১১০টার মতো লঞ্চ ছেড়ে গেছে। আজ এর সংখ্যা ১৮০টিতে দাঁড়াতে পারে।এদিকে নৌ নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করায় চরফ্যাশন বেতুয়াগামী লঞ্চ এমভি তাসরিফের চালক মনির উদ্দিনকে ১০ হাজার টাকা ও অনাদায়ে এক মাসের জেল দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।বরগুনাগামী লঞ্চ যুবরাজের টিকিট নিয়েছেন রাজিব চন্দ্র সাহা। তিনি জানান, সকাল ১১টার মধ্যে লঞ্চে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু যানজটকে মাথায় রেখে ঘাটে চলে এসেছি ৯টায়।এদিকে সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোতে তিল পরিমাণ জায়গা না থাকায় অধিকাংশ লঞ্চের ছাদে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। চরফ্যাশনগামী লঞ্চ পানামা-২ এর যাত্রী মানজুরা খাতুন বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি। কোনও জায়গা নেই। তাই আপাতত ছাদে বিছানা করেছি।ছাদে যাত্রী বহনের বিষয়ে জানতে চাইলে লঞ্চটির ম্যানেজার ওমর ফারুক ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘মানুষ বাড়ি যাবে না? মানুষ যদি ছাদে ওঠে তাহলে আমরা কী করবো? আমরা অনুরোধ করেছি। কিন্তু যাত্রীরা মানছে না।
এদিকে, ঈদ যাত্রায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও স্বস্তিতে বাড়ি ফিলছে ঘরমুখো মানুষ। মহাসড়কে টঙ্গীর আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরর চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত কোনও যানজট দেখা যায়নি। ঈদ যাত্রায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওই ১২ কিলোমিটার অংশে যানজটের আশঙ্কা করলেও এখন পর্যন্ত মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়নি। ব্যস্ততম এই মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়াই ঈদে ঘরমুখো উত্তরাঞ্চলের মানুষ যাতায়াত করেছেন। স্বাভাবিক গতিতেই গাড়ি চলছে মহাসড়কে।বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) সরেজমিনে মহাসড়কের আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী, বোর্ড বাজার, মালেকের বাড়ি, কলেজগেট, ভোগড়া বাইপাস এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এবারের ঈদ যাত্রায় মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করছে। মাঝে মাঝে মহাসড়ক অনেক সময় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তবে ফাঁকা এই মহাসড়কে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের পাশাপাশি ট্রাক, পিকআপে করেও গ্রামের দিকে রওনা দিচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। যানজট নিরসনে তৎপর রয়েছে পুলিশ। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে মহাসড়কে যানবাহন ও মানুষের চাপ অনেক বেশি।ময়মনসিংহগামী ইসলাম পরিবহনের চালক মফিজ উদ্দিন বলেন, গত বছর ঈদের এক সপ্তাহ আগেও যানজটে নাকাল ছিল মহাসড়কটি। এবারও মহাসড়কটিতে যানজটের তীব্র আশঙ্কা করেছিলাম। তবে এবার ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মহাসড়কের কোনও স্থানে যানজট চোখে পড়েনি।
আলম এশিয়া পরিবহনের ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়াগামী যাত্রী ইকবাল হোসেন বলেন, বিগত বছরে ঈদের সপ্তাখানেক আগে থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের কারণে মহাসড়কে জ্যামে আটকে থাকার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। এবারের যাত্রায় যানজট না থাকায় এ সড়কে যাতায়াতরত চালক ও যাত্রীদের স্বস্তিতে বাড়ি ফেরার দৃশ্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে।ময়মনসিংহগামী সোনার বাংলা পরিবহনের যাত্রী শারমিন আক্তার সাথী বলেন, আগে এ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজট লেগেই থাকতো। এ মহাসড়কের ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা অঞ্চলের ঘরমুখো মানুষ এবার স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছেন।সালনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাসুদেব সিনহা বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে চাপও বাড়ছে। তবে কোথাও কোন দীর্ঘ বা স্থায়ী যানজট সৃষ্টি হচ্ছে না। মহাসড়ক অনেক সময় ফাঁকা থাকলেও আগামীকাল শুক্রবার থেকে মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, তবে অন্য সময়ের চেয়ে যানবাহনের চাপ বেশি রয়েছে। আজ সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত ও কিছু পোশাক কারখানা ছুটি হবে। তাই আগামীকাল শুক্রবার থেকে যানবাহন ও ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। মূলত আগামীকালের যানজট নিরসনের পরিকল্পনা করেই আমরা দায়িত্ব পালন করছি।তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ এবং কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা যানজট নিরসনে কাজ করছে। প্রতি দুই কিলোমিটার সড়কে একটি করে মোটরসাইকেলে ভ্রাম্যমাণ পুলিশ দল রয়েছে। কোথাও যানজট শুরু হলে তারা দ্রুত সেখানে পৌঁছে ব্যবস্থা নিতে পারবে। এছাড়া যানজট নিরসনে ৩টি স্থানে আইপি ক্যামেরাও স্থাপন করা হয়েছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুরের মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হুসেন বলেন, মাওনা উড়াল সেতুর নিচে যানবাহনের চাপের কারণে কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। তবে কোনও যানজট হয়নি। মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি শ্রীপুর থানা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা যৌথভাবে কাজ করছে। শুক্রবার থেকে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেশি বাড়বে। ওই সময় যাতে মহাসড়কে কোনও যানজট সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।নাওজোর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর অহিদুজ্জামান বলেন, এবারের ঈদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতে যেতে পারছে। মহাসড়ক প্রায়ই স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। আশা করছি ঈদের আগেরদিন পর্যন্ত ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই মহাসড়ক পাড়ি দিতে পারবেন।গাজীপুর হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে যানজট নিরসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৬১৮ জন সদস্য কাজ করছেন। এ ছাড়াও যানজট নিরসনে ৩টি স্থানে আইপি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নির্বিঘেœ ঘরমুখো মানুষ বাড়ি যেতে পেরেছে।