আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোনো বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।বুধবার সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও ভিজিল্যান্স টিমের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে কোনো বিদেশি শক্তির নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই। আর ভারত এযাবৎ আমার জানা মতে কখনো হস্তক্ষেপ করেনি।আমরা তো ক্ষমতার জন্য ভারতে যাইনি।আমরা ভারতে গিয়ে তিস্তার কথা বলেছি, রোহিঙ্গা সমস্যা, আমাদের জাতীয় স্বার্থ নিয়ে কথা বলেছি। বিএনপি জাতীয় স্বার্থ নিয়ে কি কোনো কথা বলেছে? কোনো পত্র-পত্রিকায় তো দেখলাম না। কোনো মিডিয়ায় কোনো খবর আছে?’ তিনি বলেন, বিএনপি গেছে নির্বাচনে তাদের সাহায্য করতে এবং নালিশ করতে। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। আমাদের দেশের নির্বাচন, আমাদের দেশের জনগণ যে রায় দেবে সে-ই ক্ষমতায় আসবে। রায়টাই এখানে বড় কথা। এখানে ভারত কি আমাদের দেশের জনগণকে প্রভাবিত করবে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশিদের কাছে নালিশ দেওয়া কোনো রাজনৈতিক দলের পরিচয় হতে পারে না। বিএনপির এখন নালিশ ছাড়া আর কিছু করার নেই। দেশে বসেও নালিশ, বিদেশে গেলেও নালিশ। নালিশ আর নালিশ দিয়ে এ দেশের দূতাবাসকে রীতিমতো তটস্থ রেখেছে বিএনপি। নালিশ করে রেজাল্ট কী হবে, সবাই জানে। তিনি আরও বলেন, কথায় কথায় দেশে অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করা দেশের জন্য শুভ নয়। এটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের পরিচয় হতে পারে না।বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বিএনপির দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিএমএইচের চেয়ে ভালো ব্যবস্থা বাংলাদেশের কোথায় আছে? সিএমএইচের চেয়ে ভালো চিকিৎসা বাংলাদেশে কোথাও আছে বলে আমাদের জানা নেই। তিনি আরও বলেন, একটি দেশের বড় দলের নেত্রী খালেদা জিয়া। একটি বড় দলের চেয়ারপারসন তিনি, তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারটি যাতে ভালোভাবে হয় সে বিষয়ে দেখা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুতেও ভালো চিকিৎসক আছেন। তারপরও যেহেতু বিএনপি চায় না, তাহলে সবচেয়ে ভালো যে হাসপাতাল আছে বাংলাদেশে সেটা হচ্ছে সিএমএইচ। এই প্রস্তাবটি বিএনপির প্রত্যাখ্যান করা উচিত নয়। যদি তারা চিকিৎসা চান। আর যদি রাজনীতি করতে চান, সেটা ভিন্ন কথা।আওয়ামী লীগের জোটে শরিকদের আসন বেশি চাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী কাদের বলেন, আসন ভাগাভাগি নিয়ে জোট নিয়ে দলের কিছু কৌশল আছে। এসব ব্যাপারে কেউ যেন কোনো দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য না রাখেন। এখানে দলের একটি পলিসি আছে। সেটি আসন ভাগাভাগি হোক, জোট গঠনের ক্ষেত্রে হোকÑসব ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত হবে। তবে এই ব্যাপারে এখনো দলীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়নি। ঈদের পরে এসব নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হবে। জোট যাদের সঙ্গে হবে, যিনি প্রার্থী হবেন তিনি অবশ্যই জয়ী হওয়ার মতো প্রার্থী হবেনÑযে দলেরই হোক। হারার জন্য মনোনয়ন দেওয়া হবে না।সড়কের বিষয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে। সড়ক সম্পর্কে কিছু বিভ্রান্তি ছড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে এবার বিশেষ যতœ নেওয়া হয়েছে। এবার প্রস্তুতি গত কয়েকবারের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে। এবার বিআরটিএতে দুটি এবং তৃণমূলে পাঁচটি মিটিং করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি কাউন্টারে জিজ্ঞেস করার পরও কেউ রাস্তা কথা খারাপ বলেনি। তাদের ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে, এ কথাও কেউ বলেনি। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এবার ঈদে সড়ক, নৌপথ ও রেলে কোনো সমস্যা নেই। এখন ঢাকা-চট্টগ্রামে কোনো যানজট নেই। কেউ বলছে না যানজটের কারণে যাত্রা বিঘœ হচ্ছে। উত্তর-দক্ষিণবঙ্গে কিছু সমস্যা হচ্ছে। পাটুরিয়াতে আবহাওয়ার কারণে ফেরিতে কিছুটা ধীর গতি হচ্ছে। প্রচ- ঢেউয়ের কারণে পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল একটু বিঘিœত হচ্ছে। এ ছাড়া সড়ক, নৌ ও রেলপথে কোনো সমস্যা নেই। বেশি ভাড়া আদায় করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী কাদের বলেন, ভাড়ার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে অভিযোগ করেনি। তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তায় চাঁদা আদায় অথবা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ থাকলে আমাকে জানাবেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।