বরিশালসহ কোনো সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে না জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, আশাকরি আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি রাখবো। তবে এটা আমাদের কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।বুধবার (০৬ জুন) বেলা ১১টায় নগরের সার্কিট হাউজের সভাকক্ষে বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ওপর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এসময় আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, কোনো বিশেষ দলের জন্য আগামী নির্বাচনে আমরা আলাদা কোনো উদ্যোগ নিতে পারবো না। আমরা আকুল আহ্বান জানাই এবং সবসময় জানিয়েছি যেন সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। যাতে নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হয়। বিএনপি নির্বাচনে আসবে এটা আমরা প্রত্যাশা করি। কিন্তু কোনো দল নির্বাচনে আসবে কি আসবে না তা নিয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণের সুযোগ আমাদের নেই। তিনি বলেন, প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে। তখন আমরা আর পুরানো পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের বিড়ম্বনা পোহাতে চাই না। ২০০৮ সালে এ পদ্ধতি নিয়ে নিরীক্ষা করার পর এর সুফল পাওয়ায় আমরা চাচ্ছি পর্যায়ক্রমে এর ব্যবহার প্রসারিত করার। আমরা চাচ্ছি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে। এজন্য ইভিএম পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম। এ পদ্ধতির সুফল ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রচারে জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ইভিএম পুরোপুরি চালু করা গেলে, ভোট নিয়ে অভিযোগ বন্ধ হবে। ইভিএম নিয়ে নানান অভিযোগের কারণে আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রদর্শনের মাধ্যমে এটা যে সঠিকভাবে কাজ করে তা প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনটি কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে। সেই তিনটা কেন্দ্র আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। আরো কয়েকটা কেন্দ্রে অনিয়মের ব্যাপারে আমরা অনুসন্ধান করেছি এবং একটি কেন্দ্রে ত্রুটি পেয়েছি সে কেন্দ্রের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো। তবে সেখানে হাতেগোনা কয়েকটি কেন্দ্র ছাড়া সবগুলোতে সঠিকভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
তিনি বলেন, ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩/৪ টি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়া আমাদের বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিস্থিতিতে এমনটা হতে পারে। কোনো কেন্দ্র বন্ধ থাকবে, কোনো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে না এটা হতে পারে। তবে আমরা চেষ্টা করছি এমনটা যেন না হয়। এরকম যে অন্য কোনো সিটি নির্বাচনে ২/১ টি হবে না তার নিশ্চয়তা দেওয়ার সুযোগ নেই। এরকম হয় ভোট বন্ধ করে দেব বা পুনরায় ভোটগ্রহণ করবো। এখন আমরা শুধু বরিশালে নয়, অন্যান্য সিটি করপোশনের নির্বাচনে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করবো যাতে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়। খুলনায় যে ভুলত্রুটি ধরা পড়েছে সেগুলো কিভাবে শোধরানো যায় তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আর সকলে সমর্থন, আস্থা আসে তবে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, তবে সবগুলোতে সম্ভব হবে না। বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইভিএম বিষয়ক উপস্থাপনা করেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বিজে মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুজ্জামান, নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক, বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজুর রহমান।