এখনও শত শত ম্যানগ্রোভ প্রজাতির ছইলা-কেওড়া গাছের গোড়াগুলো স্বাক্ষ্য দিচ্ছে এখানে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চল ছিল। কোনটা দৃশ্যমান, কোনটা পানির নিচে। মাত্র এক/দেড় বছর আগে সম্পুর্ণটা নিধন করা হয়েছে। এখন এক প্রভাবশালী ব্যক্তি গোটা এলাকা দখল করে মাছের ঘের করেছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মধুখালী লেকের পূর্বপাড়ে মেলাপাড়া গ্রামের উল্টোদিকে বিশাল এই মাছের ঘেরটির অবস্থান। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ছিল সবুজ অরণ্যে ঘেরা এই জায়গাটি। ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বনকে চাষযোগ্য খাসজমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত দেয় চার জনকে। তাঁদের কাছ থেকে আবার সাবলিজ নেয় প্রভাবশালী ওই ঘের ব্যবসায়ী।
চার একর লিজ নিয়ে এখন অন্তত ১৬ একর জুড়ে দখল করেছে। এর মধ্যে থাকা শত শত প্রাচীন গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে। এখন কোটি টাকা আয়ের একটি অবৈধ পন্থা বের করেছেন ওই ব্যক্তি। তেগাছিয়া মৌজার তিন নম্বর সিটের এসএ খাস খতিয়ানের ২৪৩৯ নম্বর দাগে এই কোটি টাকার সরকারি জমির অবস্থান। অবৈধভাবে বনাঞ্চলকে চাষযোগ্য খাস জমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত দেয়া চার ভূমিহীন মেলাপাড়া গ্রামের কামাল, সবুজ গাজী, সাফাখালী গ্রামের আনসার মৃধা ও তেগাছিয়া গ্রামের রুশিয়া চার একর জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন। কিন্তু তারা ওই জমিতে চাষাবাদ করতে পারেন না ঘের করার জন্য। অগত্যা চেষ্টা না করে নামে মাত্র একসনা কিছু টাকা ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির স্থানীয় এজেন্ট এখন এই ঘের দেখভাল করছেন। এসব জমি উদ্ধারে কিংবা সরকারের সম্পত্তি রক্ষায় কখনই নয়াকাটা তহশিলের অধীন তেগাছিয়ার তহশিলদাররা কেউ আন্তরিক ছিলেন না। মেলাপাড়া গ্রামটি যেন ভূমিহীনে সয়লাব। অথচ তাদের ভাগ্যে এসব খাস জমি জোটেনি। এমন অভিযোগ করলেন মেলাপাড়ার এক গরিব কৃষক মোঃ বেলায়েত হোসেন। তারা জানালেন গল্পের মতো তথ্য। দখলদারচক্র অন্তত ১০কিমি দুরের চার নম্বর সিটের লেমুপাড়া মৌজা দেখিয়ে তেগাছিয়া মৌজার এই জমি দখলে রেখেছে প্রভাবশালীমহল। এভাবে কয়েক কোটি টাকার সরকারি জমি এভাবে বেহাত হয়ে আছে। যেখানে সরকারিভাবে ভীমহীনদের পুনর্বাসনে অন্তত ২০টি ব্যারাক করার সুযোগ রয়েছে। বানাতি ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (তহশীলদার) মোঃ জাফর হোসেন জানান, বিষয়টি জেনে নিতে হবে। ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মোঃ হেমায়েত উদ্দিন হীরন জানান, বিষয়টি উপজেলা ভূমি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তানভীর রহমান জানান, অবৈধভাবে কেউ এভাবে সরকারের জমি দখল করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে ওই জমি উদ্ধারে জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।