গ্রীষ্মকালেও বৃষ্টির দাপট চলছেই। তবে বৃষ্টি থেমে গেলে কিছুক্ষণ পরই ভ্যাপসা গরম পড়ছে। তবে ভ্যাপসা গরম হয়তো দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে। কারণ, আবহাওয়া অধিদপ্তর ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।গ্রীষ্ম আসতেই কী বৃষ্টিটাই শুরু হয় এবার! দিন নেই, রাত নেই কেবল বৃষ্টি আর ঝড়। গত শুক্রবারও সারাটা দিন ঝুম বৃষ্টি হলো রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে। কিন্তু এরপর থেকে সব যেন ওলট-পালট। গত শনিবার ছিল ভ্যাপসা গরম। রোববারও বেহাল দশা। উত্তরের জেলা রাজশাহীসহ অন্যান্য জায়গায়, দক্ষিণে যশোর, খুলনায় দাবদাহ আসি আসি করছিল। তবে উত্তরাঞ্চলে বয়ে যায় কালবৈশাখী।সঙ্গে ছিল প্রচুর বৃষ্টি।সোমবার কিছুটা গরম পড়লেও বৃষ্টি-ঝড়ের ঝাপটা আগামীকাল মঙ্গলবার লেগে যেতে পারে রাজধানী ঢাকায়। বৃষ্টি হলে ভ্যাপসা গরম কমে আসতে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদেরা।গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গরম পড়ার কারণ সম্পর্কে আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস প বলেন, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থেকে এখন বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প আসছে। বাতাসে এই জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হলে তাপমাত্রা বাড়ে এবং মানুষের শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। এতে অস্বস্তি অনুভব হয়। তবে দক্ষিণ দিক থেকে আসা বাতাস উত্তরে গিয়ে বাধা পাচ্ছে। এই পুবালি বায়ুর সঙ্গে পশ্চিমা বায়ুর মিলনে উত্তরাঞ্চলে কালবৈশাখী বয়ে গেছে। এর ফলে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে এসব অঞ্চলে। ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে আগামীকাল থেকে বৃষ্টি হতে পারে।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে রংপুরে ৮৮ মিলিমিটার। এ ছাড়া রাজারহাটে ৮৭, সৈয়দপুরে ৪৭, ডিমলায় ৭৪, দিনাজপুরে ২৪, বগুড়ায় ১৫, নেত্রকোনায় ১৮ ও তেঁতুলিয়ায় ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।খুলনা: সূর্য তেজদীপ্ত উদিত হয়ে দিনমান দাবদাহে পোড়াচ্ছে প্রাণীকূল। সারাদেশে মতো খুলনায়ও চলছে তাপদাহ। গরমে মানুষের অবস্থা বেগতিক। স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে হাঁপিয়ে উঠছে জনসাধারণ। বিশেষ করে রোজাদাররা দিনের বেলায় রোদের কারণে বাসা-বাড়ি থেকে বের হওয়ার উপক্রম নেই। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। দিনে যেমন রোদের খরতাপ তেমনি রাতে বইছে গরম হাওয়া। ফলে অফিসগামী মানুষ, শ্রমিক, শিক্ষার্থী এবং অল্প বয়সের শিশুরা গরম ও তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। জৈষ্ঠ্যের প্রখর তাপদাহের অস্বস্তিতে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। শুধু মানুষ নয়, গোটা প্রাণীকূলও দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে একটু স্বস্তির জায়গা খুঁজছে। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। শহরে লোডশেডিং তেমন একটা না থাকলেও অসহনীয় এ গরমে গ্রামে বিদ্যুতের লোডশেডিং দুর্বিষহ করে তুলেছে জনজীবন। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা অসুখ ও অসুস্থতায়।মহানগরীর ব্যস্ততম শিববাড়ির মোড়ের পথচারী ব্যবসায়ী সরফরাজ সোমবার (২৮ মে) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বলেন, প্রচন্ড গরমে রাস্তা ঘাট ফাঁকা। গাড়িও চলছে কম। জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে নাজুক হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক কাজকর্ম।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনা অঞ্চলে বর্তমানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রোববার খুলনা বিভাগে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজকে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী তিন/চারদিন গরমের তীব্রতা থাকবে। এরপর বৃষ্টি হতে পারে।