স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকাকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘ঢাকা বাংলাদেশের দর্পণ ও প্রাণকেন্দ্র। ঢাকাকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করতে চাই।বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী ঢাকার ফার্মগেটে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মাদকবিরোধী অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।আসাদুজ্জামান খান বলেন, মাদকের আগ্রাসন আমাদের চিন্তায় ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা বলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মাদকবিরোধী অভিযান চলছে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি পরিবারে কেউ মাদকাসক্ত থাকলে সেই পরিবার হাড়ে হাড়ে টের পায় মাদকের ভয়াবহতা।
মাদক নির্মূল করতে সবার সহযোগিতার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মাদক নির্মূল করতে সবার সহযোগিতা চাইছি। মাদককে না বলতে শিখতে হবে। যারা মাদক ব্যবসা করে, তাদের কোনো স্থান নেই।যেকোনো মূল্যে মাদকের আগ্রাসন থেকে মানুষকে রক্ষা করার ঘোষণা দেন মন্ত্রী।গোয়েন্দা সংস্থার তালিকা ধরে দেশের সব মাদক চোরাকারবারিকে আইনের আওতায়’ আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হতাহতের খবরের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য এল।মাদকবিরোধী অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার তালিকা অনুযায়ী দেশের সব মাদক ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা হবে।ৃ মাদকের সঙ্গে যেই যুক্ত হোক, তাকে শাস্তি পেতেই হবে।ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া একই অনুষ্ঠানে জানান, অভিযানের জন্য ঢাকা শহরের ‘শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের’ তালিকা তৈরি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরতে গিয়ে মাদকাসক্ত ঐশী রহমানের হাতে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান খুন হওয়ার প্রসঙ্গ টানেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল।
তিনি বলেন, মাদকের জন্য কী ঘটে, তা আপনারা দেখেছেন। সুতরাং আপনার সন্তান, ভাই, প্রতিবেশী- কে কি করছে লক্ষ্য করুন। এবং মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশকে তথ্য দিন।প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্প্রতি সারা দেশে মাদক নির্মূলে অভিযানে নেমেছে। এসব অভিযানে গত ছয় দিনেই বিভিন্ন জেলায় অন্তত ৪৪ জন কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।মাদকের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে তা দমন করছে- তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন মানবাধিকারকর্মীরা।বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের ঘটনাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে বিএনপিও সরকারের সমালোচনা করেছে।তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল আগেই বলেছেন, মাদকের কারবারে যুক্ত কেউ ছাড় পাবে না- সে সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা বা সাংবাদিক- যেই হোক না কেন।ঢাকা মহানগরে ‘শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের’ তালিকা প্রস্তুতের কথা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হবে।গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে হতাহতের ঘটনা ঘটলেও ঢাকায় এখনও তেমন কিছু হয়নি।
কতজনের তালিকা করা হয়েছে জানতে চাইলে আছাদুজ্জামান মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা নির্ভুল তালিকা যাতে প্রস্তুত হয়, সেজন্য যাচাই-বাছাই করছি। দুই এক দিনের মধ্যে তা চূড়ান্ত হবে।পুলিশ কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগরের জনগণের সহযোগিতায় আমরা জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সফল হয়েছি। মাদকের এই ভয়াবহতা থেকেও আমরা সফল হতে পারব।