কুষ্টিয়া, জামালপুর, কুমিল্লা, গাইবান্ধা ও লালমণিরহাট, ফেনী ও রংপুর, ঠাকুরগাঁওয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৫ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।পুলিশ ও র‌্যাব বলছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বুধবার সকালের মধ্যে পাঁচ জেলায় মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে তাদের বন্দুকযুদ্ধ হন।কুষ্টিয়া:কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই জন মারা নিহত হয়েছেন।তারা হলেন: ফটিক ওরফে গাফফার (৩৭) ও লিটন শেখ (৪০)।

পুলিশের দাবি, তারা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার লাহিনী পাড়ার গড়াই নদীর পাড় সংলগ্ন ব্রিজের নিচে ও ভেড়ামারা উপজেলার হাওখালী মাঠে এসব ঘটনা ঘটে।পুলিশ জানায়, মাদক কেনাবেচার উদ্দেশ্যে একদল মাদক ব্যবসায়ী লাহিনী পাড়ার গড়াই নদীর পাড় সংলগ্ন ব্রিজের নিচে অবস্থান করছে। এমন গোপন সংবাদ পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।পরে পুলিশ জানতে পারে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যাক্তি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী ফটিক ওরফে গাফফার।ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি ও ৭০০ পিচ ইয়াবা ও ৫০০ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়েছে।ফটিক ওরফে গাফফার উপজলার এলেঙ্গিপাড়া গ্রামের মৃত ওসমান গনীর ছেলে।এদিকে, ভেড়ামারা উপজেলার হাওখালী মাঠে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিটন শেখ (৪৫) নিহত হন।পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৩ রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ২ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে।লিটন শেখ উপজেলার নওদাপাড়া এলাকার মৃত গোলবার শেখের ছেলে। পরিবারের দাবি গতকাল রাত থেকে লিটন নিখোঁজ ছিল।

জামালপুর:জামালপুরে পুলিশের সাথে কথিত ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ একমাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।এ ঘটনায় অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা উদ্ধারসহ সদর থানার ওসি আহত হয়েছে।জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিমুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার গভীর রাতে শহরের ছনকান্দা মাদ্রাসা বালুঘাট এলাকায় মাদকের অভিযান চালায়। এসময় অজ্ঞাত এক মাদক ব্যবসায়ী (৪০) পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এ সময় পুলিশও পালটা গুলি করলে ঘটনাস্থলে অজ্ঞাত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন।এ সময় তার কাছ থেকে বিদেশি রিভলভার, ৩ রাউন্ড গুলি, ১০০০ পিচ ইয়াবাসহ ১০০ গ্রাম হিরোইন উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় সদর থানার ওসি নাসিমুল ইসলাম আহত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।কুমিল্লা:কুমিল্লায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুরুল ইসলাম ইছা নামের এক তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কার চর ব্রিজ সংলগ্ন গোমতী বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।ইছা একই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নুরুল ইসলাম ইছা একজন চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী।পুলিশের বিশেষ অভিযানে মঙ্গলবার বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য অনুসারে ইছার সহযোগীদের আটক এবং মাদক উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করে।গভীর রাতে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমনের নেতৃত্বে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের একটি টিম শহরতলীর টিক্কারচর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া মুঠো ফোনে জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নুরুল ইসলাম ইছার সহযোগী অপর মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গুলি বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ী ইছা গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধারের পর কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত ইছার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ৭টি মামলা রয়েছে বলেও ওসি জানান।গাইবান্ধা:গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে র্যা বের সাথে বন্দুকযুদ্ধে’ জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজু নিহত হয়েছেন।ঘটনাস্থল থেকে গাঁজাসহ বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে র্যা ব-১৩।র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে উপজেলার বিশ্রামগাছী গ্রামে অভিযানে নামে র্যা ব। এসময় র্যা বের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা র্যা বের ওপর গুলি চালালে তারাও পাল্টা গুলি চালায়।ঘটনাস্থলে মাদকদ্রব্যসহ বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবরুদসহ রাজুকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পলাশবাড়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।রাজু মিয়া পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের রাইগ্রামের মৃত আব্দুল জোব্বারের ছেলে।রাজু এ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীÑ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

ফেনী:চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ফেনীতে মঙ্গলবার রাতে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আরও একজন নিহত হয়েছেন।র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়াত জামিল ফাহিম বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ফেনী শহরের দাউদপুর এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।নিহত মোহাম্মদ ফারুক (৩৫) চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাকার অলি আহম্মেদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক আইনের একাধিক মামলা রয়েছে।শাফায়াত জামিল বলেন, চট্টগ্রাম থেকে মাদকের চালান ঢাকা যাওয়ার খবরে ফেনীর দাউদপুর কাঁচা বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে রাতে তল্লাশি করছিলেনর‌্যাব সদস্যরা। এ সময় একটি প্রাইভেটকারকে থামার ইংগিত দেয়া হলে সেখান থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। র‌্যাবও আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। তাতে মাদক ব্যবসায়ী ফারুক গুলিবিদ্ধ হন।

পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।। র‌্যাব বলছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ ও ২২ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে তারা। পাশাপাশি মাদক চোরাকারবারিদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।রংপুর:ভোরে রংপুর সদর উপজেলার হাজিরহাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শাহিন মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত শাহিন তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতা বলে জানিয়েছেন রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফ।তিনি জানান, এসময় ঘটনাস্থল থেকে এক বস্তা ফেনসিডিল ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।ঠাকুরগাঁও:ঠাকুরগাঁওয়ে মাদক মামলার এক আসমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।জেলার পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, বুধবার ভোরে উপজেলার ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের বনবাড়ি এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।নিহত আক্তাফুল (৩৮) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের পারুয়া গ্রামের ভেলসা মোহাম্মদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা, গরু চুরির পাশাপাশি মাদক আইনের ১৯টি মামলা রয়েছে থানায়।পুলিশ সুপার বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে পুলিশ আক্তাফুলকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে ১০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।তার তথ্যের ভিত্তি করে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের একটি দল রাত ৩টার দিকে আক্তাফুলকে নিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলায় রওনা হয় বলে জানান পুলিশ সুপার। পথে ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের বনবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। প্রায় ২০ মিনিট গোলাগুলির এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ী আক্তাফুল নিহত হন।