গাজীপুরের শ্রীপুরে এক গৃহবধূ তার পুলিশ কর্মকর্তা স্বামীর পরকীয়া ও যৌতুকের জন্য নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে শিশু সন্তানকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাষ্কর্যে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা বুধবার দুপুরে শ্রীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ের পাশে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাষ্কর্য“স্মৃতিসৌধ-৭১” প্রায় ঘন্টাব্যপী অবস্থান গ্রহণ করেন।
গৃহবধূ রিতা আক্তার জানান, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুয়াটোবা গ্রামের আব্দুছ ছাত্তারের ছেলে পুলিশের কন্সটেবল আব্দুল আজিজ ২০০৯ ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা গ্রামের রিতা আক্তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের দাবীতে আজিজ তার স্ত্রীর উপর নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতন সইতে না পেরে রিতা একাধিকবার স্বামীর যৌতুকের দাবী পূরণ করে। সম্প্রতি আজিজ কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে পদোন্নতি পান। পদোন্নতি পাওয়ার পর আজিজ আরো বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠে। সে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। গত কিছুদিন ধরে সে আবারো তার স্ত্রীর কাছে মোটা অংকের যৌতুক দাবী করে। যৌতুক না দেয়ায় খাবার খাইতে না দিয়ে স্ত্রীকে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে রিতা বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা ও কমপক্ষে তিন লাখ টাকার আসবাবপত্র এনে দিতে বাধ্য হয়। আজিজ যৌতুকের দাবী পূরণ না করায় আজিজ তার স্ত্রী ও সন্তানকে বাসা থেকে বের করে বাবার বাড়ি দেয়। উপায়ান্তর না দেখে রিতা তার তিন বছরের শিশু সন্তান আনন্দকে নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া গ্রামে বাবা-মায়ের বর্তমান বাসায় আশ্রয় নেয়। আজিজ সেখানে গিয়েও রিতাকে মারধর করে এবং সংসারের ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করে দেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে গৃহবধূ রিতা তার স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ করেন। কিন্তু তাতেও নির্যাতন না কমেনি। ফলে বাধ্য হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে বিচার প্রার্থনা করেন রিতা। আজিজ বর্তমানে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ লাইনে চাকুরী করছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই আব্দুল আজিজ বলেন, অভিযোগগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। এসব বিষয়ে পুলিশ বিভাগ তদন্ত করছে। তদন্তের পরই সঠিক তথ্য জানা যাবে। আজকাল সামান্য বিষয়াদি নিয়ে মহিলারা স্বামী বা পুরুষের বিরুদ্ধে যৌতুকসহ নির্যাতনের নানা মিথ্যা অভিযোগ যেমনিভাবে করে থাকে, তেমনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করেছে রিতা।