আজকে (রোববার) বিকেল ৫টার মধ্যে কোটা সংস্কার নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে সোমবার থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্রধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

কোটা বাতিলের ঘোষণা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার সকাল ১১টায় বিক্ষোভ মিছিল করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। মিছিল শেষে এমন ঘোষণা দেন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান। এদিন পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের কথা বলা হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে ক্লাস হয়নি। তবে সব বিভাগে ক্লাস পরীক্ষা হয়েছে। রোববার মিছিল শেষে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নূর বলেন, সরকার যখন ডেকেছে, আমরা সাড়া দিয়েছি। ৭ মের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা ছিল, কিন্তু তা না হওয়ায় ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়েছে। বাংলার ছাত্র সমাজ তাদের অধিকার আদায়ে আর ছাড় দেবনা। যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না করা হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাবো।

নূর আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন আমরা তার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছি এবং আমাদের আন্দোলনকে স্থগিত করে আনন্দ মিছিল করেছি। কিন্তু তার ঘোষণার ২৭ দিন পার হয়ে গেলেও আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন পাইনি। ছাত্রদের সাথে কেন এমন প্রহসন করা হচ্ছে?

এছাড়াও সেখানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন এবং যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান। রাশেদ খান বলেন, বাংলার ছাত্র সমাজকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা করা হয়নি। আমাদের সাথে নাটক করা হচ্ছে। বাংলার ছাত্র সমাজ নাটক মেনে নেবেনা। দ্রুত সময়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ছাত্র সমাজ আবারও রাস্তায় নামবে।

হাসান আল মামুন বলেন, আমাদের আন্দোলনকারীদের উপর বিভিন্ন রকমের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে ৷ যারা এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের বাড়িতে হামলা করা হচ্ছে। গতকালও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার উপরও হামলা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে নিরাপত্তা দাবি করছি এবং একই সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শুরু হয়। পরে মধুর ক্যান্টিন, লেকচার থিয়েটার ভবন, সূর্যসেন হল, মুহসীন হল, নীলক্ষেত মোড় ঘুরে ভিসি চত্বর, ফুলার রোড, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ হয়ে ঢাবি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের ভেতরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তীব্রতা পায় গত এপ্রিলে। সরকারি চাকরিতে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। ওই ঘোষণার পর দ্রুত কোটা সংস্কার বিষয়ে প্রজ্ঞাপনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন স্থগিত করে আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে ৭ মে পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারির সময় বেঁধে দেয় আন্দোলনকারীরা। তবে এর মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় আবার রাজপথে নামে তারা।