মাদারীপুরের কালকিনিতে দুই থেকে তিনগুণ লাভের কথা বলে প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে ডে-নাইট পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি এনিজও। প্রতারণার শিকার হয়ে প্রায় ১০ হাজার গ্রাহক তাদের পাওনা টাকা আদায়ের জন্য ঘুরছেন প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে। অনুমতি ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকের টাকা নিয়ে এমন টালবাহানা করলেও সরকারি কোন দপ্তরের নেই নজরদারি।
২০১১ সালে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগরে মনিরুজ্জামান বিলাসবহুল একটি বাড়ি নির্মাণ করে সেখানে খুলে বসেন ডে-নাইট পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি এনিজও। পরে লোভনীয় বেতনে বেশকিছু কর্মী নিয়োগ করে ব্যাংক ও বীমার চাইতে কয়েকগুণ বেশি মুনাফা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক হিসেবে সঞ্চয় টাকা আদায় করে। মেয়াদ শেষে গ্রাহকরা তাদের পাওনা টাকা ফেরত চাইলে নানা টালবাহানা শুরু করে অফিসের কর্মকর্তারা। পরে গত ১০ এপ্রিল গ্রাহকের তোপের মুখে পড়ে অফিসে তালা দিয়ে গা ঢাকা দেয় সংস্থার সাথে জড়িত সবাই।
প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা বলেন, ‘এখন আমরা শুধু হায়, হায় করছি। কর্মীদের কাউকে পাই না। আমার ৬৫ হাজার টাকা হইছে। তা চাইছি কিন্তু দেয়নি। পরে অফিসে গিয়ে দেখি সবাই উধাও।’ এদিকে সরকারি কোন অনুমতি ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করলেও এমন ঘটনা জানেননা জেলার সরকারি কোন দপ্তরের কর্মকর্তারা। মাদারীপুর জেলা সমবায় কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানটি মানুষের অর্থ নিয়ে উধাও হয়েছে সেটা আমাদের সমবায় অধিদপ্তরের আওতায় নিবন্ধিত নয়। তাই দেখাশুনার দায়িত্বও আমাদের ছিলনা।’
এ ঘটনায় ভুক্তভোগিরা কালকিনি থানায় ও মাদারীপুর আদালতে একাধিক মামলা করলে অভিযানে নামে পুলিশ। দুইজন গ্রেফতার হলেও মূলহোতা মনিরুজ্জামান এখনো পলাতক। মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, ‘অতিরিক্ত লাভের উদ্দেশ্যে নিয়ে তারা ব্যাপক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।’ তিন মাস আগে রাজৈরেও একই কায়দায় গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে বায়রা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির কর্মকর্তারা।