ছাত্রলীগের দুদিনব্যাপী ২৯তম জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং পরে পায়রা উড়িয়ে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন। আগামী দিনের নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে ছাত্রলীগের সম্মেলনে যোগ দিয়েছে ১০৯টি সাংগঠনিক ইউনিট। এ ছাড়া সংগঠনের নেতাকর্মী, সম্মেলনে আসা সারা দেশের কাউন্সিলর-পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ।

এবারের নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রথমে পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করা হবে। তবে সেটি না হলে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। একই সঙ্গে একই পদ্ধতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।

গত ২৫, ২৬ ও ২৯ এপ্রিল ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, মহানগর উত্তর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সম্মেলন হয়। সম্মেলনের দিনই ছাত্রলীগের এই তিন ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা হলেও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়নি। এবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসতে ৩২৫ জন পদপ্রত্যাশী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১২৫ ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২০০ জন মনোনয়ন নিয়েছেন।

ছাত্রলীগের বয়সসীমা একবছর বেড়ে ২৮ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনে বয়স কত হবে, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা দ্বিধার মধ্যে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় বয়স গুঞ্জনের অবসান ঘটলো। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা করলে কেউ ছাড় পাবেনা বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুক্রবার বিকেলে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ভিসির বাড়িতে হামলাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর আগে, বিকেল চারটায় জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দু’দিনের এই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংগঠনিক সংগীত পরিবেশন করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তাকে ব্যাচ পরিয়ে দেন ছাত্রলীগ নেতারা। সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেয়ার পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি জনগণের জন্য। দেশকে এগিয়ে নিতে ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। এসময় সমঝোতার মাধ্যমে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব করার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাঙ্গালীর যতটুকু অর্জন সেই অর্জনে রয়েছে ছাত্রলীগের অবদান। সততার পথ, ন্যায়পরায়ণতার পথে যে চলবে তাকে কেউ কখনও ক্ষতি করতে পারবে না। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ধরণের ভাংচুর করবে না। ছাত্ররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করবে সেটা আমি বরদাস্ত করবো না। কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত খরচ সরকার দেয়। প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন করা হয়েছে। তাই ভাংচুর করে সেগুলো নষ্ট করা চলবে না।’ সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব আসবে বলেও তিনি জানান।